জামায়াত ক্ষমতায় যেতে বিএনপিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে : তুহিন

পাবনা ৩ আসনে বিএনপির মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে তারা কোন সময় ৬ ভাগের বেশি ভোট পায়নি৷ অথচ আশ্চর্য কথা এই ছয় ভাগ ভোটের যারা মালিক তারা গত ১৭ বছর কি এমন আন্দোলন সংগ্রাম করেছে? ৫ ই আগস্টের পর তাদের এখন ডানা গজিয়েছে, আকাশে উড়তে চান। এটা হবে না। বর্তমানে যে ষড়যন্ত্র চলছে তার নেতৃত্ব দিচ্ছে এই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা।
তিনি বলেন, নতুন ফ্যাসিস্ট জামায়াতে ইসলাম দলটি ষড়যন্ত্র করছে যাতে বিএনপি ক্ষমতায় যেতে না পারে। কিন্তু অত সহজ হবে না। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তারা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইদের কে বিভ্রান্ত করা শুরু করেছে। ছয় ভাগ ভোটের মালিক কিভাবে বিএনপি'র ৪০ ভাগ ভোটের উপরে যেতে পারে তা আমরা জানি না। অথচ তারা লম্ফ ঝম্প করছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুরে উপজেলা যুবদল কর্তৃক আয়োজিত নির্বাচনী মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার পর আমরা মনে করেছিলাম, যারা ১৭ বছর একসাথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, বিগত সরকারের সবাই আমরা যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, তারা একসাথে নির্বাচন করবো। আমরা স্বপ্ন দেখলাম সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করবো। গণতন্ত্র ফিরে আসবে, সবাই সুখে শান্তিতে বসবাস করবে। অথচ বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের একদিন পরেই ৭ তারিখে ঢাকার ওয়ালে ওয়ালে তারা লিখছে 'নৌকা আর ধানের শীষ দুই সাপের এক বিষ'। সেখান থেকেই তারা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। সেই ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নাই। ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ হবে না। জামায়াত হলো আওয়ামী লীগের চেয়েও পুরনো দল। অথচ তারা ক্ষমতার লোভে ভারতের সাথে চুক্তি করেছে। তাদের মনোগ্রাম থেকে আল্লাহর নাম বাদ দিয়ে দিয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তুহিন বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান বিগত ১৪ মাসে এমন কোন বক্তব্য দেয়নি যার মাধ্যমে দেশে কোন বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে। সবাইকে এক প্লাটফর্মে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তার বক্তব্যে কোন জাতিগত বিভেদ বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি। অথচ জামায়াতের আমির সহ তাদের নেতাকর্মীরা প্রতিদিন লম্প ঝম্প করে বড় বড় বক্তব্য দিচ্ছেন, হুমকি ধামকি দিচ্ছেন। আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমানের বক্তব্যকে তারা বিকৃত করে বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।
কৃষিবিদ তুহিন বলেন, আমাদের দল বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। সাধারণ মানুষের ভোটাধিকারে বিশ্বাসী। আমাদের দল বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিপরীতে কোন কিছু বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ ছিল ভারতের দালাল। আর জামায়াত হলো পাকিস্তানের দালাল। যারা বাংলাদেশ চায়নি, বাংলাদেশের গণতন্ত্র চায়নি, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার চায়নি, আর তারা কোনোভাবেই বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসবে আমি মনে করি এই ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের মানুষ কোনদিন বাস্তবায়ন হতে দেবে না ইনশাআল্লাহ। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইদেরকে যেন কেউ বিভ্রান্ত করতে না পারে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষকে বিজয়ী করার আহবান জানিয়ে হাসান জাফির তুহিন বলেন, যারা কাজ করবেন তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী মুল্যায়ন করা হবে। আমার বাড়িতে যদি চুলায় আগুন জ্বলে তাহলে সবার বাড়ির চুলায় আগুন জ্বলবে। নেতাকর্মীদের চাকুরী, ব্যবসায় সহযোগিতা করা হবে। আওয়ামভ লীগ যা করছে আমরা তা করবো না। আমরা সততার সাথে কাজ করবো। যোগ্যতার মাপকাঠি দেখে নেতাকর্মীদের তাদের যথাযথ জায়গায় সম্মান দেয়া হবে। দোয়া করেন আমি যদি এমপি হতে পারি তাহলে আরো বড় জায়গায় যেতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
চাটমোহর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক রনি সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম কালু, মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, চাটমোহর পৌর বিএনপির সভাপতি আসাদুজ্জামান আরশেদ, ফরিদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাকিম খান, মুলগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন বিশ্বাস, ফরিদপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আমিনুল হক সাবেরী, ভাঙ্গুড়া উপজেলা যুবদলের আহবায়ক ফরিদুল ইসলাম, চাটমোহর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক শরীফুল ইসলাম, ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সোহাগ সরকার, সাবেক ছাত্রনেতা মজনুর রহমাান প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, চাটমোহর পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জিয়ারুল হক সিন্টু, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরোজ খান, হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মোক্তার হোসেন, সাইফুল ইসলাম সহ অনেকে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ






