ইয়াবা সম্রাট রাসেল ও ‘বটবাহীনি’ চক্রের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুইছড়ি ইউনিয়নের প্রেমবাজার এলাকায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা ইয়াবা সম্রাট মোহাম্মদ রাসেলের মব সৃষ্টি করে অন্যায় ভাবে মোঃ শাহিন কে গ্রেফতার করায় বিশাল মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) মোহাম্মদ শাহিনের মুক্তির দাবিতে বিশাল মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এলাকার শত শত মানুষ এতে অংশ নেন।
‘পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিত ফাঁসানো’ অভিযোগ স্থানীয়দের স্থানীয়দের অভিযোগ, পুইছড়ি ইউনিয়ন শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের উপ–ক্রীড়া সম্পাদক ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ রাসেল এবং তার নেতৃত্বাধীন ‘বটবাহীনি’ নামের একটি চক্র পূর্ব শত্রুতার জেরে শাহিনকে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে।
তাদের দাবি—ক্রিকেট খেলার মাঠে হঠাৎ সৃষ্ট একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চক্রটি শাহিনের ওপর হামলা চালায়। এরপর তাকে ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয় দিয়ে জনতা তৈরি করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এমনকি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মিছিলে শাহিনের ছবি বসিয়ে ভুয়া প্রপাগান্ডা ছড়ানো হয়—যা পরবর্তীতে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
অভিযোগ উঠে, এখানেই থেমে থাকেনি চক্রটি। উল্টো শাহিনসহ এলাকার ৫–৬ জন গরিব-অসহায় যুবকের বিরুদ্ধে ‘যখম’, ‘চুরি’, ‘ছিনতাই’, ‘চাঁদাবাজি’সহ নানা বানোয়াট অভিযোগে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ক্ষোভ :
“নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের চক্র শান্ত এলাকা অশান্ত করছে”
মানববন্ধনে উপস্থিত পুইছড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি হুররম রেজা বলেন, শাহিন ভদ্র, শান্ত ও সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি ছেলে। এখনও ভোটারও নয়। পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে—এটা নিন্দনীয়।
তিনি পুলিশি ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন, তদন্ত ছাড়াই, কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই একজন নিরীহ ছেলেকে গ্রেপ্তার করা কি গ্রহণযোগ্য?”
তিনি অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, শাহিনের নিঃশর্ত মুক্তি এবং ইয়াবা সম্রাট রাসেল–জয়নাল চক্রকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত যুবদল নেতা হারুনুর রশীদ বলেন, ঘটনাটা আমার চোখের সামনে ঘটেছে। কয়েকজন লোক শাহিনকে মারছিল। তারা বলে—ও ছাত্রলীগ করে তাই মারছি। অথচ এলাকাবাসী জানে—শাহিন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই জড়িত নয়।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, জয়নাল নামের ব্যক্তি গত ১৭ বছর প্যাসিস্ট সরকারের দলে থেকে ইয়াবা, মাটি, মদের ব্যবসা থেকে শুরু করে মামলা বাণিজ্য পর্যন্ত করেছেন। এখন সরকার পরিবর্তনের পর নিজেকে বিএনপি নেতা সাজিয়ে পুরোনো অপকর্ম চালাচ্ছে। সুবিধাবাদীরা বিএনপির বদনাম ছড়াতে সক্রিয়।”
তিনি দলের হাই কমান্ডের প্রতি আহ্বান জানান এ ধরনের সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার।
মানববন্ধনে জনতার হুঁশিয়ারি ও দাবি :-
মোঃ রাসেল (২৫), পিতা–মোঃ বাদশা, মধ্যম পুইছড়ি, ০১ নং ওয়ার্ড কর্তৃক ১৯ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে দায়ের করা মামলাকে মানববন্ধনে উপস্থিত জনতা “সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন” বলে দাবি করেন।
তাদের অভিযোগ পূর্বের ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে শাহিন আলম, আবুল কাসেম, জিসান, মনির উদ্দীন, সাইদুল ইসলাম জিদানসহ আরও কয়েকজন নিরীহ যুবকের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাটক সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, ঘটনার সাথে তাদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। আইনকে বিভ্রান্ত করে হয়রানি করা হচ্ছে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তারা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত, সত্য উদঘাটন, এবং নিরপরাধদের মুক্তি দাবি করেন।
মানববন্ধনের বক্তারা বলেন, মোহাম্মদ শাহিনের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা মামলা ও নিরীহ যুবকদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। বটবাহীনি চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে, এলাকার শান্তি নষ্টকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
মানববন্ধন শেষে প্রেমবাজার কেন্দ্রীয় সড়ক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এ বিষয়ে বাঁশখালী থানার অফিসার(ইনচার্জ) সাইফুল ইসলাম বলেন, শাহিনের আগে মামলা ছিল কিনা জানি না। কর্তব্য অপরাধে জড়িত কারো বিরুদ্ধে তথ্য পাওয়া গেলে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে। বিষয়টি তদন্তাধীন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ





