গভীর সম্পর্কের জেরে ঘর ছেড়েছেন দুই বিবাহিতা নারী

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় মোবাইল ফোন পরিচয়ের সূত্র ধরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠা দুই নারী হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। গত ৯ নভেম্বর সকাল থেকে নিখোঁজ রয়েছেন পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের জীবননালা গ্রামের মোছা: মিম খাতুন (২৩) এবং নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট গ্রামের মোছা: স্মৃতি (২৫)।
পরিবারের দাবি, দেড়বছর পূর্বে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক থেকে শুরু হওয়া সম্পর্ক এতটাই গভীর হয়েছিল যে দুই নারী নিজ নিজ বাড়ি থেকে একই সময়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় পরিবারগুলো চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন। নিখোঁজের সময় মিমের ৪ বছর বয়সী কন্যা এবং স্মৃতির ৭ বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে ফেসবুকে পরিচয় হয় মিম ও স্মৃতির। প্রথমে সাধারণ আলাপ হলেও ধীরে ধীরে তাদের বন্ধুত্ব ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে রূপ নেয়। স্মৃতি একাধিকবার মিমের বাড়িতে যাতায়াত করেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে দু’জন প্রায় প্রতিদিনই ফোনে দীর্ঘ সময় কথা বলতেন।
পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, ৮ নভেম্বর মিম তার বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর পাওনা ১ লাখ ৮ হাজার টাকা নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যান। পরদিন ৯ নভেম্বর ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। একই সময় স্মৃতিও নোয়াখালীর নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি।
দুইজনের মোবাইল ফোনও নিখোঁজের পর থেকে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। মিমের স্বামী দীর্ঘদিন বিদেশে থাকায় গত দেড় বছর ধরে তিনি বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। আর এ সময়েই সে এই সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
মিমের মা নাজমা বেগম জানান, “মেয়ে প্রতিদিন অনেকক্ষণ মোবাইলে কথা বলত। জানতে চাইলে সে বলত জামাইয়ের সঙ্গে কথা বলছি। পরে সন্দেহ হওয়ায় আমি গোপনে শোনার চেষ্টা করি। তখনই বুঝতে পারি ওদের মধ্যে আলাদা সম্পর্ক রয়েছে। মেয়ের কাছে জানতে চাইলে আমরা বান্ধবী পেতেছি।”
মিমের বাবা লিটন মৃধা বলেন, “আমরা বুঝতেই পারিনি ওদের সম্পর্ক এত গভীর হয়েছে। স্মৃতি নিয়মিত আমাদের বাড়িতে আসত। ওরা ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলত। হঠাৎ দু’জন একসঙ্গে উধাও হবে—ভাবতেও পারিনি।”
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, “আমরা থানায় জিডি করতে গেলে পাংশা থানা পুলিশ তা নেয়নি। প্রশাসন আমাদের কোনো সহযোগিতা করছে না।”
এ বিষয়ে পাংশা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, মিম ও স্মৃতির মধ্যে একটা সম্পর্ক ছিল। তাদের দুজনের মধ্যে যাতায়াত ছিল। মিম এর আগে স্মৃতির কাছেও গিয়েছিল। তারা দুজনেই সাবালক, স্ব-ইচ্ছায় তারা ঘর ছেড়েছে। এ ঘটনায় মিমের মা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত চলমান রয়েছে।
এদিকে দুই নারী একই দিনে নিখোঁজ হওয়ায় এলাকায় নানান গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুক পরিচয়, সম্পর্কের গভীরতা, একই সময়ে নিখোঁজ হওয়া—সব মিলিয়ে ঘটনা ঘিরে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা দ্রুত দুই নারীর সন্ধান পেতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ





