ভারতের আগ্রাসন ঠেকাতে সাহসী ও দক্ষ জাতীয় নেতৃত্ব দরকার

বাংলাদেশের অভিন্ন নদীর ন্যায্য পানিবণ্টনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন থাকলেও ভারত তা মানছে না—এমন অভিযোগ তুলে পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির নেতারা বলেছেন, ভারতের পানি আগ্রাসন ঠেকাতে হলে প্রয়োজন সাহসী ও দক্ষ জাতীয় নেতৃত্ব।
শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে রাজবাড়ী কনভেনশন সেন্টারে “ফারাক্কা ব্যারেজ ও বাংলাদেশের সংকট”, “পদ্মা ব্যারেজ ও বাংলাদেশের সম্ভাবনা”, “দ্বিতীয় পদ্মা সেতু ও আগামীর সম্ভাবনা” এবং “আলোকিত রাজবাড়ী—কেমন রাজবাড়ী চাই” শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা তুলে ধরেন বক্তারা। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি, রাজবাড়ী জেলা শাখা।
বক্তারা বলেন, ফারাক্কা ব্যারেজের কারণে পদ্মা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে পানি সংকট, নদীভাঙন, কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়া এবং পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে। আন্তর্জাতিক আইন থাকা সত্ত্বেও ভারত একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে বাংলাদেশের প্রতি অবিচার করছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।
তারা মনে করেন, পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ কেবল অবকাঠামো নয়—এটি দেশের পানি–অধিকার, খাদ্য–নিরাপত্তা এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যাবশ্যক।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বলেন, “পদ্মা ব্যারেজ বাংলাদেশের পানি–অধিকার রক্ষার সংগ্রাম। ভারতের পানি আগ্রাসন প্রতিরোধে আজ প্রয়োজন মওলানা ভাসানীর মতো সাহসী নেতৃত্ব। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে বাঁচাতে হলে ব্যারেজ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সৌভাগ্যবান যে এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ভাই। দেশের পানির ন্যায্য অধিকার আদায়ে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।”
পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির সভাপতি, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজবাড়ী–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম বলেন, “ফারাক্কার প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি, পরিবেশ ও জনজীবন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পদ্মা ব্যারেজ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। পাশাপাশি যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নে দ্বিতীয় পদ্মা সেতুও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি আরও বলেন, “ব্যারেজ নির্মাণ হলে পদ্মায় পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, কৃষি উৎপাদন বাড়বে, নদীভাঙন কমবে এবং পরিবেশগত ভারসাম্য ফিরবে। এটি শুধু রাজবাড়ী নয়, গোটা দেশের মানুষের প্রাণের দাবি।”
এছাড়াও সেমিনারে বক্তব্য রাখেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল ও কমিটির উপদেষ্টা এস এম মতিউর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য খন্দকার আব্দুস সাত্তার, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কমিটির মহাসচিব আবু ওহাব মো. হাফিজুল হক প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিনের পানি–সংকট ও নদীভাঙন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখো মানুষের জীবন-জীবিকাকে বিপর্যস্ত করেছে। স্থায়ী সমাধান হিসেবে পদ্মা ব্যারেজ বাস্তবায়ন এখন জাতীয় অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও জেলা শাখার সভাপতি সালাম তাসির। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আহসানুল করিম হিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রউফ হিটু।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ





