শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষনা দেননি: মিলন

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে দেশের জনগণ স্বত:স্ফুর্তভাবে অংশ গ্রহন করে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করে সংসদে পাঠাবে। কিন্তু বিগত সতের বছরে এটা হয়নি। দেশের কোন জনগণ ভোট দিতে পারেনি। ভোট দিয়েছেন মাত্র একজন ভোটার। তিনি হলেন পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। রোববার বিকেলে মৌগাছি ইউনিয়নের অর্ন্তগত ১নং ওয়ার্ড বিএনপি কর্তৃক আয়োজিত আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং পবা-মোহনপুর আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট শফিকুল হক মিলন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পতিত সরকারের আমলে যে নির্বাচন হয়েছে সেইগুলো ছিলো দিনের ভোট রাতে এবং ভোটের আগেরদিনও ব্যালটে সিল মেরে রেখে দিতো। এজন্য জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন সে সময়ে হয়নি। খুনি হাসিনা যাকে ইচ্ছা তাকে এমপি ও চেয়ারম্যান বানিয়ে দিয়েছেন। যা খুশি তাই করেছেন। সুতরাং আগের নির্বাচনগুলি চাইতে এখনকার নির্বাচন হবে অন্যরকম। এজন্য হচ্ছে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের সাথে থাকতে হবে। আর এই নির্বাচনের গুরুত্বটা বোঝার জন্য উপস্থিত নারী ও পুরুষদের অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, পতিত সরকারের আমলে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা অমানবিক কষ্ট করেছে। সে সময়ে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের ষাট লক্ষ নেতা কর্মীর নামে পাঁচ লক্ষ্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০ হাজারের অধিক নেতা কর্মীকে খুন করা হয়েছে। সতেরশত নেতাকর্মীকে গুম করে আয়না ঘওে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। কাউকে কাউকে খুন করা হয়েছে। ছাত্ররা জানে তারা শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ পায় নাই। যুবকরা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে নাই। বেকারত্বে অভিশাপে তারা বিপর্যস্ত। ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবসা করতে পারেনাই। তিনি বলেন, পতিত সরকারের আমলে বিএনপি পরিবারের সন্তানদের চাকরি হতোনা। এমনকি মেয়ের ভাল বিয়ে পর্যন্ত তারা দিতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মিলন বলেন, বর্তমানে সেই অবস্থা থেকে দেশ এখন অনেকটাই মুক্ত। ছাত্র-জনতা ও বিএনপি নেতাকর্মীদের ত্যাগের বিনিময়ে পতিত সরকার পালাতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন, এই উপজেলায় পতিত সরকারের আমলে নির্যাতনে অনেক নেতা মারা গেছেন। তারা আজকে বেঁচে থাকলে এই পরিবেশটা দেখলে তারা আনন্দিত ও পুলকিত হতেন। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মত কেউ ত্যাগ করতে পারেননি। তিনি বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী ও দুইবার বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। তিনি একজন সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী, তাঁকে কিভাবে সামান্য একটা অজুহাত দেখিয়ে ট্রাস্টের নামে মিথ্যা মামলা করে সাজা দিয়েছিলো পতিত সরকার।
তিনি বলেন, কেউ প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার যখন দায়িত্বভার গ্রহন করেন, তখন একটা একাউন্ট থেকে আরেকটি একাউন্টে অনেক সময়ে অর্থ স্থানান্তর করতে হয়। সেটাকে কোনভাবেই অনিয়ম বলা হয়না। কিন্তু পতিত সরকার সেই অজুহাতে বেগম জিয়ার নামে দিয়ে ক্যাঙ্গারু কোর্টের মাধ্যমে ফরমায়েশি রায় দিয়ে জেলে পাঠায়। বেগম জিয়া উচ্চ আদালতে ইাপল করলে সাজা না কমিয়ে আরো পাঁচ বছর বাড়িয়ে দেয়া হয। যা পৃথিবীর বুকে নজির বিহিন।
তিনি জেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে স্লোপয়জোনিং করা হয়েছিলো। সেইথেকে তিনি অসুস্থ। বার বার তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এত নির্যাতন ও সন্তানদের হত্যার হুমকী পরোয়া না করে দেশেই ছিলেন এখনো আছেন। তিনি অনেক সুযোগ পেয়েছেন এ দেশ থেকে চলে যাওয়ার জন্য। সন্তানদের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে তাকে শোনানো হয়েছে। সেইসাথে বলা হয়েছে দুই সন্তানকে নিয়ে দেশের বাইরে চলে যাওয়ার জন্য। কিন্তিু সে সময়ে বলেছিলেন তার গর্ভের দুটি সন্তান হলেও বাংলাদেশে তাঁর অনেক সন্তান আছে। এদেশের মাটি তার ঠিকানা। এদেশ থেকে তিনি এক চুলও নরবেননা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ধানের শীষ কে সুরক্ষা দিতে হবে। তারা যেন আগামী দিনে কাজ করতে পারেন এবং এদেশের মানুষের মুখে দুই বেলা দুটো ভাত তুলে দিতে পারেন। সেইসাথে তাদের মৌলিক চাহিদা পুরন ও শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। আগামীর ভবিষ্যত শিশুদের একটা ভাল পরিবেশ দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, দেশদ্রোহী হওয়ার ভয়ে ১৯৭১ সালে শেখ মুজিবুর রহমান মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিতে পারেন নাই। কারন তিনি ভীত ছিলেন। তিনি ছিলেন ক্ষমতা লোভী। কিন্তু মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে বাংলাদেশ নামে একটি ভূখন্ড তৈরী করেছেন।
এরপর মেজর জিয়াকে নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার সে সময়ে নানা ষড়যন্ত্র করেছিলো। তাঁকে ক্যান্টমেন্ট এ আটক করে রেখেছিলো। এরপর ১৯৭৫ সালে সিপাহী-জনতা আন্দোলন করে তাঁকে আটকাবস্থা থেকে বের করে এনে দেশেল রাষ্ট্রভার তুলে দিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। এটা নিয়েও শেখ মুজিবরের লোক মেজর জিয়ার নামে অনেক আজেবাজে কথাবার্তা বলেছে। বর্তমানের ছাত্র ও যুবকরা অনেকেই জানেন না (যাদের বয়স ২২ থেকে ৩৫) তারা যে বিএনপি কি ছিলো। তারা ভুলে যেতে বলেছিল। আজকে সেজন্য সচেতন সমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলাম নামে একটি দল নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছে। জামায়াতে ইসলাম আসলে ইসলামী কোন দল নয়। তারা হচ্ছে মওদুদীবাদী। তাদের কথাবার্তা অনেকটাই ইসলাম বিরোধী। তারা দাড়িপাল্লায় ভোট দিলে বেহেস্ত পাবে বলে টিকিন বিক্রি করছে। কোন ধর্মপ্রান মুসলমান বলতে পারবেন তিনি নিজে বেহেস্তে যাবেন কিনা। নিজের কোন খোঁজ নাই, কিন্তু আরেকজনকে তিনি বেহেস্তে পাঠাচ্ছেন। এই সকল ভন্ড দল থেকে সবাইকে দূরে থাকার আহ্বান জানান তিন। জামায়াত দুই রকম ভূমিকা পালন করছে। এটা সবাই জানে। ভবিষ্যতে এগুলো করা থেকে জামায়াতকে বিরোত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
মৌগাছী কারিগরি স্কুল মাঠে আয়োজিত সভায় মৌগাছী ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি, বকুল হোসেন এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মহির আলীর সঞ্চালনায় বিষেশ অতিথি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহনপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামিমুল ইসলাম (মুন), সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক-১ বাচ্চু রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক-২ শাহিন আক্তার শামসুজ্জোহা, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজিম উদ্দিন সরকার, মৌগাছী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নূর-এ আলম সিদ্দিকি মুকুল, সাধারণ সম্পাদক ইউনুচ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম মাসুদ, মোহনপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মীর্জা শওকত, মোহনপুর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রায়হান ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শিমুল রানাসহ মোহনপুর উপজেলা এবং মৌগাছী ইউনিয়ন বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ




