যশোরে চাচাতো ভাইকে হত্যার দায়ে আপন দুই ভাইয়ের ফাঁসির আদেশ

যশোরের ঝিকরগাছায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চাচাতো ভাইকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে আপন দুই ভাইকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন যশোরের একটি আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আরেক আসামিকে – দণ্ডপ্রাপ্ত এক ভাইয়ের স্ত্রীকে – খালাস প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক জুয়েল অধিকারী এই রায় ঘোষণা করেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত ছবেদ আলী সরদারের ছেলে ওসমান ওআলী হোসেন। এ রায়ে ওসমানের স্ত্রী খাদিজা খাতুন খালাস দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত পিপি আজিজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের কামরুল আমিন (নিহত) এবং তার চাচাতো ভাই ওসমান ও আলী হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
ঘটনার দিন ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায়, নিজের জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণকে কেন্দ্র করে কামরুলের সঙ্গে ওসমান ও আলী হোসেনের তীব্র বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে ওসমান ও আলী হোসেন বাড়ি থেকে ধারালো দা এনে কামরুল আমিনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।
কামরুলকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী আনোয়ারা, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী পারভীন এবং ভাইপো আতাউর রহমানও হামলার শিকার হন।চারজনকে গুরুতর জখম করে দুই ভাই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা আহত চারজনকে উদ্ধার করে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে আনার পরপরই কামরুল আমিনের মৃত্যু হয়। বাকি আহত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিহত কামরুলের বাবা রুহুল আমিন সরদার বাদী হয়ে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে ঝিকরগাছা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২৪ সালের ৩ জুলাই ঝিকরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক বনি ইসরাইল আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
সোমবার রায় ঘোষণার দিনে দুই ভাই ওসমান ও আলী হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের ফাঁসির আদেশ ও জরিমানা করেন। অন্যদিকে, খাদিজা খাতুনকে খালাস দেওয়া হয়।
পিপি আজিজুল ইসলাম এই হত্যা মামলায় মাত্র দুই বছরের মাথায় রায় প্রদানকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে সরকার পক্ষ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে আসামি পক্ষ এই রায়ে ন্যায় বিচার পাননি দাবি করে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ





