তীব্র খরার মধ্যে ইরানে ভয়াবহ দাবানল

ভূপৃষ্ঠের পানির উৎস শুকিয়ে যাওয়া এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় ইরানে গত কয়েকদিন ধরে তীব্র খরা চলছে। এই সংকটের মধ্যেই দেশটির মাজানদারান প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ দাবানল। টানা সাত দিনেরও বেশি সময় ধরে পুড়ছে হিরকানিয়ান অরণ্য ও এর আশপাশের এলাকা।
জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোর ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিরকানিয়ান অরণ্যটি। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও বাসিন্দারা রোববার এএফপিকে জানান, টানা এক সপ্তাহের প্রচেষ্টায় আগুনের প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা আরও বলছেন, এই অগ্নিকাণ্ডের উৎপত্তি প্রাকৃতিক নয়; বরং মানবসৃষ্ট কারণেই আগুন লেগেছে।
কাস্পিয়ান সাগরের ইরান অংশের তটরেখা ও পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত হিরকানিয়ান অরণ্যের বয়স আড়াই থেকে পাঁচ কোটি বছরের মধ্যে বলে ইউনেস্কোর তথ্য থেকে জানা যায়। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণবৈচিত্র্যপূর্ণ অরণ্যগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। দুষ্প্রাপ্য এশীয় চিতা, পারসিয়ান চিতাবাঘসহ বহু স্তন্যপায়ী প্রাণী ও পাখির আবাসস্থল এই জঙ্গল। এখানে এমন কয়েকটি গাছের প্রজাতি রয়েছে, যা বিশ্বের আর কোথাও পাওয়া যায় না। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন অরণ্যগুলোর একটি হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।
এখন পর্যন্ত আগুন লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। হতাহতের ঘটনাও জানা যায়নি। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে মাজানদারান প্রাদেশিক সরকার।
এদিকে নাসা স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ইমেজের বরাতে জানিয়েছে, ইতোমধ্যে প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।
এছাড়া ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা ইরনা জানিয়েছে, রোববার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জোলফা শহরের সংলগ্ন অরণ্যেও নতুন করে দাবানল শুরু হয়েছে।
ইরানে যখন রাজধানী তেহরানসহ বহু শহর-গ্রাম ভয়াবহ খরার কবলে পড়েছে, ঠিক সেই সময়েই এসব অগ্নিকাণ্ড দেখা দিয়েছে। তেহরানে বর্তমানে রেশনের ভিত্তিতে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তাদের মতে, গত ৬০ বছরে দেশে এত দীর্ঘস্থায়ী ও ব্যাপক খরা আর দেখা যায়নি।
ভিওডি বাংলা/ আরিফ







