বন্দর লিজ দেয়ার সুযোগ নেই : সাইফুল হক

বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ‘বিদেশী কোম্পানির কাছে বন্দর লিজ দেয়ার চুক্তির মধ্যে কি আছে সেটা আমরা জানি না। কিন্তু বন্দরের সাথে আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত। বন্দর ব্যবস্থাপনা, টার্মিনালগুলো বিদেশিদের কাছে লিজ দেওয়ার সুযোগ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এধরনের চুক্তি করার ম্যান্ডেট এই সরকারের এখতিয়ারে নেই। আপনারা এভাবে চুক্তি করতে পারেন না। আপনাদের কাজ হবে অনতিবিলম্বে এই চুক্তির সকল কার্যক্রম বন্ধ করা এবং স্থগিত ঘোষণা করা।’
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সাইফুল হক বলেন, ‘আগামীকাল চট্টগ্রাম পোর্টের মুখে শ্রমিক কর্মচারীদের যে প্রতিবাদ আছে, আমরা নিউমুরিং কনটেইনার পোর্ট দেয়ার প্রতিবাদে যে কর্মসূচি দিয়েছে আমরা সেটির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাই। গতকাল দেখলাম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কথা বলেছেন। তার বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। বিলম্ব হলেও বিএনপি এ ব্যাপারে কথা বলেছেন এবং তাদের অবস্থান জানিয়েছেন। আমি আশা করি— আমাদের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আমাদের দেশ, সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তা বিরোধী অতি গোপনীয় যে চুক্তি হয়েছে, বিএনপি শক্তভাবে সেটির প্রতিবাদ জানাবে। সরকার যদি সঠিক পথে না হাঁটে, তাহলে সামনের দিকে বৃহত্তর কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে প্রশ্ন করতে হবে। সরকার যদি তাদের চুক্তি থেকে সরে না আসে, বাম জোট যমুনা অভিমুখে যে কর্মসূচি দিয়েছে, আমরা সেটির সাথে একাত্মতা পোষণ করছি।’
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আর মাত্র আড়াই মাস বাকি। মানুষ এখন নির্বাচনের দিকে ঝুঁকে আছেন। ১৭ বছর ধরে আমরা যে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছি, নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক নির্বাচন হয়, সেই যাত্রাপথে আপনারা এমন কিছু হাজির করবেন না— যাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিয়ে প্রশ্ন উঠে। আমি আগেও বলেছি, নিরপেক্ষতার পরীক্ষায় আপনারা পাস করতে পারেননি। আমরা দেখতে চাই— এই সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আধলে ভূমিকা পালন করবে। বিতর্কিত উপদেষ্টাদেরকে প্রত্যাহার করবেন। আগামী নির্বাচনকে যাতে অংশগ্রহণমূলক করা যায়, সেই দিকে আপনারা মনোযোগ দিবেন।’
সরকারের উদ্দেশ্যে সাইফুল হক আরও বলেন, ‘আপনারা বিতর্কিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যদি মরিয়া থাকেন, তাহলে আপনাদের অধীনে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন করতে চাইবে কিনা, এই প্রশ্ন কিন্তু বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। আমি আশা করি— আপনারা সোজা পথে হাঁটবেন।’
মতবিনিময় সভায় এসময় বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘এখনো ৯০ দিন সময় আছে, আপনারা (সরকার) বিদেশি কোম্পানির কাছে বন্দর লিজ দেয়ার চুক্তি বাতিল করেন। বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য এই চুক্তি বাতিল করেন। ইউনুস সরকার কোনো আইন মানে না এবং আইনের কোনো তোয়াক্কা করে না।
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরগুলো ইজারা দেয়ার ব্যাপারে হাইকোর্টে রিট চলতেছে। রিট চলাকালীন সময়ে ইজারা চুক্তির কার্যক্রম সে চালিয়ে গেছে। তারা আইন-আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সরকার ফরজ কাজ রেখে নফল কাজের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। এটির থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা এসরকারকে আহবান জানাচ্ছি।’
মতবিনিময় সভায় এসময় গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসানসহ আরও অনেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ







