যারা বিদেশে থাকেন তারা দেশপ্রেমিক হতে পারে না

​বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, "যারা ১৮ কোটি মানুষকে দেশে ফেলে রেখে বিদেশে অবস্থান করেন তারা দেশপ্রেমিক হতে পারে না।" তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বিদেশ থেকে এসেও ফাঁসির মঞ্চে চড়েছেন, কিন্তু দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি।

রোববার (৩০ নভেম্বর ) যশোরের চৌগাছায় সরকারি শাহাদৎ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

​এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, অনেক নেতা বিদেশ থেকে দেশে আসার সাহস পাচ্ছেন না। তিনি ইঙ্গিত করে বলেন, ইংল্যান্ডের নাগরিকত্ব ছেড়ে এসে যদি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন, তাহলে তারা "দুই কূলই হারাবেন"। তিনি জানান, তাদের প্রার্থী ডা. মোসলেহ উদ্দিন ফরিদ ৩০ বছরের ইংল্যান্ডের নাগরিকত্ব ছেড়ে দেশে এসেছেন মানুষকে সেবা করতে। তিনি উপস্থিত জনগণের কাছে তাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।

​তিনি আরও উল্লেখ করেন, "বাংলাদেশে সম্পদের কোনো অভাব নাই। আমাদের অভাব চরিত্রবান নেতার।"
​দেশের প্রধানতম সমস্যা হিসেবে দুর্নীতিকে চিহ্নিত করে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা অভিযোগ করেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর ধরে যারা দেশ শাসন করেছে, ক্ষমতা ছাড়ার পর জানা গেল তারা প্রায় ২৭ হাজার লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।

​তিনি বলেন, এতে প্রমাণ হয়, দেশটা গরিব নয়, সম্পদশালী। কিন্তু, "সম্পদের সৎ ব্যবহার করার জন্য সম্পদকে পাহারা দেওয়ার মতো বিগত ৫৪ বছরে এদেশে সৎ লোক পাওয়া যায় নাই।"

​এটিএম আজহারুল ইসলাম দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, "যদি আল্লাহ আমাদেরকে সাহায্য করেন, জনগণের ভালোবাসা পাই, জামায়াতে ইসলামী যদি জনগণের সেবা করার সুযোগ পায়, সর্বপ্রথম বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করবো ইনশাআল্লাহ।"

​তিনি ২০০১ সালের চার দলীয় জোট সরকারের আমলের উদাহরণ টেনে বলেন, জামায়াতে ইসলামী তিনটি মন্ত্রণালয় (কৃষি, শিল্প ও সমাজকল্যাণ) চালানোর সুযোগ পেয়েছিল। সাবেক আমিরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের পরিচালনায় এই মন্ত্রণালয়গুলোতে "একটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ করতে পারেনি"। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সেই আদর্শ অনুসরণ করে জামায়াতে ইসলামী দায়িত্ব পেলে বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পারবে।
​তিনি আরও যোগ করেন, ২০০১ সালে জামায়াতের নির্বাচিত ১৮ জন এমপির বিরুদ্ধেও দুর্নীতির কোনো অভিযোগ কেউ পেশ করতে পারেনি।

​আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে বিশিষ্ট শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মোসলেহ উদ্দিন ফরিদের পক্ষে উপস্থিত জনগণের কাছে ভোট চান।

​জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো: মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রসূলসহ যশোর ও ঝিনাইদহের বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা গোলাম মোরশেদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

​জনসভা মাঠ নারী ও পুরুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় মাঠের বাইরে বিভিন্ন স্থানেও বিপুল সংখ্যক মানুষ অবস্থান নেন।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ