সাদিক কায়েমের মামলা আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার: ছাত্রদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (ডাকসু) ভিপি ও ছাত্রশিবির নেতা সাদিক কায়েম শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সাইবার মামলার অভিযোগ দায়ের করেছেন, যা ছাত্রদল তাদের বক্তব্যে আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডাকসুর ভিপি পদধারী কোনো ছাত্রনেতা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সাইবার মামলা দায়ের করা ন্যাক্কারজনক ও নজিরবিহীন ঘটনা। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির সাদিক কায়েমকে আহ্বান জানিয়েছেন, আইনি প্রক্রিয়ায় মামলা প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করতে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রশিবিরের অন্যতম কেন্দ্রীয় নেতা এবং ডাকসুর ভিপি পদধারী সাদিক কায়েম কয়েকটি ফেসবুক আইডি ও পেজের বিরুদ্ধে বানোয়াট, ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেছেন। ছাত্রশিবির নেতা সাদিক কায়েমের করা এই ভিত্তিহীন সাইবার মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
এতে আরও বলা হয়, সাদিক কায়েম সাইবার মামলা করে অনলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছেন। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থেকে বাকস্বাধীনতা হরণের আওয়ামী-বাকশালী কৌশল রপ্ত করেছেন তিনি। তার ‘মামলা সন্ত্রাস’ থেকে মিম পেজ, ট্রল পেজও রেহাই পায়নি। এটি ছাত্রশিবিরের অসহিষ্ণুতার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পূর্ববর্তী ফ্যাসিবাদী আমলের সাইবার আইন বিলুপ্ত করে জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পথ উন্মুক্ত করেছে। বর্তমানে সাইবার আইনে মানহানি সংক্রান্ত কোনো মামলা দায়েরের সুযোগ নেই। কিন্তু এই আইনের অপব্যবহার করে সাদিক কায়েম শেখ হাসিনার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন।
এতে আরও বলা হয়, সাদিক কায়েম যে বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তা সাইবার সুরক্ষা আইন বা অন্য কোনো আইনের অধীনে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় না। আইনি প্রক্রিয়াকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করাই তার মূল উদ্দেশ্য। উল্লেখ্য, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে-কেউ জেনেশুনে মিথ্যা মামলা বা অভিযোগ দায়ের করলে অভিযোগকারী সেই অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কিছুদিন আগে সাদিক কায়েম নিজেই জনৈক বিএনপি নেতাকে মিথ্যা ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করে একটি পোস্ট দেন। তার অনুসারী বটফোর্স অনলাইনে ক্রমাগত নারীদের হেনস্তা ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর সংঘবদ্ধ সাইবার সন্ত্রাস চালাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ডাকসুর ভিপি পদধারী কোনো ছাত্রনেতা কর্তৃক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সাইবার মামলা দায়ের করা ন্যাক্কারজনক ও নজিরবিহীন ঘটনা। সাদিক কায়েম ডাকসুর ভিপি পদকে কলঙ্কিত করেছেন। ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে তিনি ‘ফ্রিডম অব অনলাইন এক্সপ্রেশন’-এর অধিকারকে অবজ্ঞা করেছেন।
এর আগে সোমবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবি সাইবার ইউনিটে সাদিক কায়েম ১৮টি ফেসবুক আইডি এবং ১৪টি পেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখিত আইডি ও পেজগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘অসময়ের কণ্ঠস্বর’, ‘ডাকসু কণ্ঠস্বর’, ‘আমার ডাকসু’, ‘ডিইউ ইনসাইডার্স’, ‘কাঁঠেরকেল্লা’, ‘ইয়ার্কি’, ‘বাংলাদেশ আট্রাভার্স’, ‘রৌমারি’, ‘রগ পরিচর্যা কেন্দ্র’, ‘বঙ্গগ্রাফ’, ‘ন্যাশনালিস্ট ডাটা’, ‘ভয়েস অব ডাকসু’, ‘অন্তর্বর্তীকালীন মিম পোস্টিং’, ‘বটজিপিটি’, ‘১০% মিমস’, ‘কার্টুন’ এবং ‘দি পাঙ্গাস’।
ভিওডি বাংলা/জা







