ঢাকার কাছে একই স্থানে বারবার ভূমিকম্প

মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা ১৪ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডে অনুভূত এ কম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর শিবপুর।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবাইয়াত কবির গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দেশে একটি বড় ভূমিকম্প হওয়ার পর ছোট ছোট মৃদু অনেকগুলো ভূমিকম্প হয়েছে, এগুলো আমরা এখন পর্যন্ত আফটারশক হিসেবে দেখতে পেয়েছি।
আফটারশক হিসেবে আরও কেমন ভূমিকম্প হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে এমন তথ্য আপাতত নেই। তবে যেগুলো হয়েছে তা থেকে আমাদের গবেষণা বলছে সবগুলোই আফটারশক।
এদিকে গত ২১ নভেম্বর (শুক্রবার) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে সর্বপ্রথম। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী এটি ঢাকা থেকে প্রায় ২৫-৪০ কিমি দূরে। (এটিই ছিল সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প)। পরে ২২ নভেম্বর (শনিবার) সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে ৩.৩ মাত্রার মৃদু ভূমিকম্প। উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর পলাশ। সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে ৪.৩ মাত্রার ভূমিকম্প। উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী থেকে ১১ কিমি পশ্চিমে (ইউএসজিএস) ৩.৭ মাত্রার (ইএমএসসি)।
একইদিন সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৫ সেকেন্ডে আরেকটি ভূমিকম্প হয়েছে এর উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী। মোট (২১ ও ২২ নভেম্বর প্রায় ৩১ ঘণ্টার মধ্যে)- ঢাকা ও এর আশপাশে চারবার ভূমিকম্প হয়। ২৭ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার)- বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট ২০ সেকেন্ডে ৩.৬ মাত্রার ভূমিকম্প। উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর ঘোড়াশাল। বিশেষজ্ঞের মতে, এই তারিখ পর্যন্ত গত শুক্রবার (২১ নভেম্বর) থেকে মোট ৬ দফায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ছোট ও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পগুলো একটি বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস। ভূতাত্ত্বিকরা দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন যে বাংলাদেশ একটি সক্রিয় প্লেট সীমান্তে অবস্থান করছে, যেখানে যেকোনো সময় বড় ধরনের কম্পন ঘটতে পারে।
বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের দুটি প্রধান উৎস
১. ডাউকি ফল্ট-শিলং মালভূমির পাদদেশে ময়মনসিংহ–জামালগঞ্জ-সিলেট অঞ্চলে বিস্তৃত প্রায় ৩৫০ কিমি দীর্ঘ ফল্টলাইন।
২. সিলেট-চট্টগ্রাম-টেকনাফ-সুমাত্রা পর্যন্ত বিস্তৃত টেকটনিক জোন, যা বিশেষজ্ঞরা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন।
ঢাকার ১৫টি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা
গবেষণা অনুযায়ী রাজধানীর যেসব এলাকা বড় ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে-
সবুজবাগ, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, কাফরুল, ইব্রাহিমপুর, কল্যাণপুর, গাবতলী, উত্তরা, সূত্রাপুর, শ্যামপুর, মানিকদী, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, খিলগাঁও ও বাড্ডা।
৩২টি এলাকার জরিপ: দক্ষিণ ঢাকার ঝুঁকি বেশি
ঢাকার ৩২টি এলাকার কাঠামোগত শক্তি ও ঘনবসতি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সংকীর্ণ রাস্তাঘাট ও উদ্ধার কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতার কারণে দক্ষিণ ঢাকা তুলনামূলকভাবে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
তবে উত্তরাঞ্চলের কাফরুল, ইব্রাহিমপুর, কল্যাণপুর, মানিকদী ও গাবতলীও উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে।
ভিওডি বাংলা/জা






