মেহেরপুরে শিক্ষক কর্মবিরতি, পরীক্ষা নিচ্ছেন অভিভাবকরা

দেশব্যাপী প্রাথমিক শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির প্রভাব পড়েছে মেহেরপুরের ৩০৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সহকারী শিক্ষকরা শাটডাউন কর্মসূচিতে থাকায় অধিকাংশ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষার দায়িত্ব নিয়েছেন অভিভাবকরা। তারা প্রশ্নপত্র বিতরণ, খাতা সংগ্রহ এবং পরীক্ষার কক্ষ তদারকিসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, কর্মবিরতির কারণে কোনো শিক্ষকই পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালন করছেন না। ফলে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়া শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিতে বাধ্য হয়ে মাঠে নেমেছেন স্থানীয় অভিভাবকরা।
কোথাও কোথাও অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এসে পরীক্ষা বন্ধ করার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক চাপ বেড়ে গেছে এবং অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক রুবেল হোসেন জানান, কর্মবিরতির ঘোষণা প্রকাশের পর থেকে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আহ্বানে অভিভাবকরাই পরীক্ষার দায়িত্ব নিয়েছেন।
অভিভাবক সুমি খাতুন বলেন, “বাচ্চারা সারাবছর যে পরিশ্রম করেছে, সেই মূল্যায়ন হয় এই পরীক্ষায়। শিক্ষকদের আন্দোলনে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি।”
আরেক অভিভাবক শহিদুল বলেন, “শিক্ষকদের দাবি থাকতে পারে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা জিম্মি করা গ্রহণযোগ্য নয়। আন্দোলন তারা করুক, তবে বার্ষিক পরীক্ষা সময়মতো নেওয়া উচিত।”
গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভেজ সাজ্জাদ রাজা বলেন, “গতকাল পরীক্ষা নিতে পারিনি। আজ উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিও) স্যার নির্দেশ দিয়েছেন যে কোনোভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে। শিক্ষকরা সহযোগিতা না করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও অভিভাবকদের সহায়তায় পরীক্ষা নেওয়া হবে।”
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এস এম জয়নুল ইসলাম বলেন, “বেশিরভাগ সহকারী শিক্ষক বিদ্যালয়ে থাকলেও ক্লাস বা পরীক্ষা নিচ্ছেন না। তাই প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবকদের সহায়তায় পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত পরিস্থিতির সমাধান হবে।”
ভিওডি বাংলা/জা







