• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা, আজ ঐতিহাসিক যশোর মুক্ত দিবস

যশোর প্রতিনিধি    ৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪২ পি.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

আজ ৬ ডিসেম্বর, ঐতিহাসিক যশোর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশের প্রথম শত্রুমুক্ত এই জেলাটি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এই দিনটি এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে আছে, কারণ যশোরেই প্রথম উড়েছিল বিজয়ী বাংলাদেশের রক্ত সূর্যখচিত গাঢ় সবুজ পতাকা।

​মুক্তিযুদ্ধের সময় যশোর ছিল ৮নং রণাঙ্গনের অন্তর্গত, যার কমান্ডার ছিলেন মেজর এম. এ. মঞ্জুর। অন্যদিকে, পাকিস্তানি বাহিনীর ১০৭নং ব্রিগেডের কমান্ডার ছিলেন ব্রিগেডিয়ার হায়াত খান।

উত্তাল একাত্তরের যুদ্ধপ্রস্তুতিকালে ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ যশোর কালেক্টরেটের সামনে এক জঙ্গি মিছিলে হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন চারুবালা কর। স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনিই যশোরের প্রথম শহীদ। এরপর থেকেই সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ছাত্র, যুবক ও নারীদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রতিরোধ সংগঠিত হতে থাকে।

​ডিসেম্বর মাসের শুরুতেই যুদ্ধ আরও তীব্র হয়। ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। মিত্রবাহিনীও সীমান্ত এলাকা থেকে যশোর সেনানিবাসসহ পাকিস্তানি সেনাদের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা ও গোলা নিক্ষেপ করতে থাকে।

​মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর সম্মিলিত আক্রমণে পর্যুদস্ত পাকিস্তানি বাহিনী ৫ ডিসেম্বর থেকে পলায়ন শুরু করে। যশোর সেনানিবাস ছেড়ে তারা ছিন্নভিন্ন হয়ে খুলনার গিলাতলা সেনানিবাসের দিকে পালাতে থাকে। পলায়নকালে ৫ ও ৬ ডিসেম্বর শহরতলীর রাজারহাটসহ বিভিন্ন স্থানে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে তাদের তুমুল লড়াই হয়।

৬ ডিসেম্বর দুপুরের পরপরই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যশোর সেনানিবাস খালি করে পালিয়ে যায়। বিকেলের আগেই মিত্রবাহিনীর কমান্ডার জেনারেল বারাতের নেতৃত্বে মিত্র ও মুক্তিবাহিনী সেনানিবাসে প্রবেশ করে এবং দখল নেয়।

যশোর শত্রুমুক্ত হওয়ার এই খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে সমগ্র জেলায় মুক্তির আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা দেয়। মুক্তিসেনা ও জনতার ঢল নামে শহরে। পাড়া-মহল্লায় বের হয় খণ্ড খণ্ড আনন্দ মিছিল।

দেশের মধ্যে প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা হওয়ার গৌরব অর্জন করে যশোর। এই দিন শহরের প্রধান প্রধান স্থানে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয়, যা ছিল দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের এক অন্যতম প্রধান অর্জন।

​ঐতিহাসিক যশোর মুক্ত দিবস শুধু যশোরবাসীর জন্য নয়, গোটা বাঙালি জাতির জন্য এক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এই দিনটি একদিকে যেমন মুক্তিসেনাদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, তেমনি এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। প্রতি বছর এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করা হয়।


ভিওডি বাংলা/ এমএইচ


  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় রাজবাড়ীতে দোয়া মাহফিল
বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় রাজবাড়ীতে দোয়া মাহফিল
পাংশায় সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের 'গ্রাহক আস্থা সম্মেলন' অনুষ্ঠিত
পাংশায় সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের 'গ্রাহক আস্থা সম্মেলন' অনুষ্ঠিত
সিরাজগঞ্জে ৪৩ কেজি গাঁজা ও ট্রাকসহ মাদক কারবারি আটক
সিরাজগঞ্জে ৪৩ কেজি গাঁজা ও ট্রাকসহ মাদক কারবারি আটক