মা–মেয়ের নৃশংস হত্যা
লায়লার দেহে ৩০টি ও নাফিসার ৬ ছুরিকাঘাত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা–মেয়ে হত্যাকাণ্ডে নিহত লায়লা আফরোজের (৪৮) দেহে প্রায় ৩০টি এবং তার ১৫ বছর বয়সী মেয়ে নাফিসার দেহে অন্তত ৬টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গের কর্মকর্তাদের বরাতে পুলিশ জানায়, দুজনের গলা ও ঘাড় লক্ষ্য করেই মূলত ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
সোমবার ( ৮ ডিসেম্বর) সকালে মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের নিজ বাসায় লায়লা এবং তার মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। মাত্র চার দিন আগে কাজে যোগ দেওয়া খণ্ডকালীন গৃহকর্মীই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
নাফিসার বাবা, ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলশিক্ষক এ জেড আজিজুল ইসলাম তখন কর্মস্থলে ছিলেন।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ ইবনে মিজান সাংবাদিকদের বলেন, গৃহকর্মীই এ ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে—ঘটনার আগে ও পরে শুধু ওই গৃহকর্মীই ফ্ল্যাটে প্রবেশ ও বহির্গমন করেছেন। আরও কেউ জড়িত কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।
ফুটেজে দেখা যায়, আয়েশা নামের ওই গৃহকর্মী সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরে ফ্ল্যাটে ঢোকেন এবং ৯টা ৩৬ মিনিটে স্কুল ড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যান। নিহত নাফিসার কাজিন নুরেম মাহপারা বলেন, স্কুল ড্রেসটি নাফিসারই ছিল।
পরিবার জানায়, সকাল ৭টার দিকে আজিজুল বাসা থেকে বের হন। স্কুলে পরীক্ষা থাকায় তিনি স্বাভাবিক সময়ের আগেই ফিরে আসেন। বারবার ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে চাবি দিয়ে দরজা খুললে প্রবেশমুখেই মেয়ের লাশ এবং রান্নাঘরের মেঝেতে রক্তে ভেজা অবস্থায় স্ত্রীর দেহ দেখতে পান। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে পুলিশে খবর দেন।
হত্যাকাণ্ডের সময় পাশের দুই ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা বাইরে ছিলেন, তাই কেউ কোনো শব্দ শুনতে পাননি।
ভবনের ম্যানেজার মোহাম্মদ আইয়ুব জানান, প্রায় ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী চার দিন আগে কাজ চাইতে এসেছিলেন এবং পরিবার গৃহকর্মী খুঁজছিল বলে তাকে পাঠানো হয়। তিনি বলেন, স্কুল ড্রেস পরা থাকায় আজ সকালে প্রথমে তাকে চিনতে পারেননি। থামালে তিনি বলেন, দুই দিন আগে অতিথি হয়ে এসেছিলেন এবং এখন বের হচ্ছেন। এরপর দ্রুত রিকশায় করে সরে পড়েন।
পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারের জন্য একাধিক দল অভিযান চালাচ্ছে।
ভিওডি বাংলা/ আরিফ







