দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত বিএনপি: তারেক রহমান

জনগণ দায়িত্ব দিলে বিএনপি আবারও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্ত নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি লিখেন, বাংলাদেশে দুর্নীতি কীভাবে সাধারণ মানুষের জীবনকে স্থবির করে দিচ্ছে, তা বোঝা কঠিন নয়। মেধাভিত্তিক চাকরি পাওয়া থেকে শুরু করে কৃষকের সাধারণ সরকারি সেবা গ্রহণ, হাসপাতালের ভোগান্তি কিংবা উদ্যোক্তাদের ঘুষের চাপ—সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতির নেতিবাচক প্রভাব দৃশ্যমান।
তারেক রহমান বলেন, খাবারের দাম বৃদ্ধি, শিক্ষার মানের অবনতি, সড়কের নিরাপত্তাহীনতা—এসব সমস্যার মূলেও রয়েছে একই কারণ: দুর্নীতি। এটি প্রতিদিন লাখো মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই নতুন নয়। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস সেই লড়াইয়ের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেয়, আর মনে করিয়ে দেয় সেই সময়টাও—যখন বাংলাদেশ প্রকৃত অগ্রগতি করেছিল। আর সেই অগ্রগতি এসেছিল মূলত বিএনপি সরকারের সময়।
তারেক রহমান উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রশাসনে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন, যা অনিয়ম কমাতে সাহায্য করেছিল। পরে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আমলে সরকারি প্রতিষ্ঠানে আধুনিকায়ন, নতুন ক্রয় নীতিমালা, কঠোর আর্থিক আইন, শক্তিশালী অডিট কার্যক্রমসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করা হয়।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ ছিল ২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠন, যা একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়। বিশ্বব্যাংক ও এডিবি এটিকে বাংলাদেশের জবাবদিহিতে বড় অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেছিল। টিআইবির জরিপেও ২০০২–২০০৫ সালের মধ্যে দুর্নীতির পরিস্থিতির উন্নতির প্রমাণ পাওয়া যায়।
বিএনপির অর্জনের মধ্যে তিনি তুলে ধরেন—
• শক্তিশালী আর্থিক ব্যবস্থাপনা
• স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক সরকারি ক্রয় নীতি
• টেলিকম, মিডিয়া ও বিমান পরিবহনে উন্মুক্ত বাজার ব্যবস্থা
• প্রশাসনে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ
আগামী দিনের পরিকল্পনা হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন—
• বিচারব্যবস্থা, দুদক, নির্বাচন কমিশনসহ সব প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা
• উন্মুক্ত দরপত্র, সম্পদ বিবরণী ও রিয়েল-টাইম অডিট
• আইনশৃঙ্খলা ও বিচারব্যবস্থার পেশাদার সংস্কার
• ই-গভর্ন্যান্সের মাধ্যমে ঘুষের সুযোগ কমানো
• হুইসলব্লোয়ার সুরক্ষা
• নৈতিক শিক্ষাকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা
• স্বাধীন অডিট ও সংসদীয় নজরদারি জোরদার করা
তারেক রহমান বলেন, বহু বছরের অব্যবস্থাপনার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। সৎ নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও জনগণের সমর্থন থাকলে পরিবর্তন সম্ভব।
তিনি আরও যোগ করেন, জনগণ দায়িত্ব দিলে বিএনপি আবারও সেই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।
ভিওডি বাংলা/জা







