‘প্রতিশোধ নয়, সমাধানের পথে বিএনপি’—তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি প্রতিশোধের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে সমাধানের পথে বিশ্বাস করে। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—কোনও বাংলাদেশিকে রাষ্ট্রের ভয়ে বাঁচতে হবে না, সে সরকার সমর্থক হোক বা বিরোধী। মানবাধিকারই মানুষের বেঁচে থাকার মৌলিক শর্ত।”
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান লিখেন, “আজ বাংলাদেশের প্রয়োজন রাজনীতির চেয়েও বড় কিছু—একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ, যেখানে সবার মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। বিরোধী মত গণতন্ত্রের অংশ হবে, হুমকি নয়। ভিন্ন মতের কারণে কাউকে নিপীড়িত হতে হবে না, কেউ গুম হয়ে যাবে না।”
স্ট্যাটাসে তিনি অতীতের বিভিন্ন ঘটনা স্মরণ করে বলেন, “আমরা আবরার ফাহাদ, মুশতাক আহমেদ, ইলিয়াস আলী, সাজেদুল ইসলাম সুমন, সাগর-রুনি ও অসংখ্য শহীদের গল্প মনে রাখি—যেন ভবিষ্যতে এমন নিপীড়ন ও দায়মুক্তি আর ফিরে না আসে।”
তিনি জানান, বিএনপি বড় ধরনের ক্ষতির মধ্য দিয়েও ভেঙে পড়েনি। “সত্য, ন্যায়, জবাবদিহি, পুনর্মিলন ও আইনের শাসনে বিশ্বাস রেখে আমরা আরও শক্তিশালী হয়েছি। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে প্রতিটি মানুষের কণ্ঠ, অধিকার ও জীবন মূল্যবান—যেখানে মানবাধিকারই ভবিষ্যতের ভিত্তি।”
দীর্ঘ রাজনৈতিক দমন-পীড়নের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “১৬ বছর ধরে বাংলাদেশ যেন এক অন্ধকারের নিচে চাপা ছিল। ভিন্ন রাজনৈতিক অবস্থানে থাকা মানুষদের জন্য এটি ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা—রাতের বেলা দরজায় কড়া নাড়া, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, ভয়কে সংস্কৃতি বানিয়ে ফেলা, নিখোঁজ প্রিয়জনদের অপেক্ষা।”
তিনি দাবি করেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, হেফাজতে মৃত্যু ও মিথ্যা মামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। “২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানেও সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে বিএনপির ঘরেই।”
নিজের রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, “২০১৫ সাল থেকে আমার কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। দেশের কোনও পত্রিকা, টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়া যেন আমার বক্তব্য প্রকাশ না করে—এমন নির্দেশনা ছিল। তারপরও আমি গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার নিয়ে লড়াই চালিয়ে গেছি।”
তিনি আরও বলেন, “এই পুরো অন্ধকার সময়টায় খালেদা জিয়া ছিলেন ধৈর্য ও প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় প্রতীক। তার ওপর রাজনৈতিক নিপীড়ন ছিল পুরো কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিচ্ছবি। তবুও তিনি গণতান্ত্রিক আদর্শ থেকে সরে যাননি।”
শেষে তিনি উল্লেখ করেন, “কষ্ট সবসময় মানুষকে তিক্ত করে না; কখনও তা মানুষকে মহান করে তোলে। দেশকে বদলাতে হলে ঘৃণার পথ নয়—ন্যায়, নৈতিকতা ও ক্ষমাশীলতার পথই ভবিষ্যত গড়ে।”
ভিওডি বাংলা/ আরিফ







