• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

লন্ডনে বসেই তারেক রহমান ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক    ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৮ এ.এম.
তারেক রহমান-ছবি-ভিওডি বাংলা

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন রেখে তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তফসিল ঘোষণার পর থেকে একটি প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে-বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে বসে ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন কি না।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই বিষয়ে স্পষ্ট জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী তারেক রহমান চাইলে লন্ডন থেকেই ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন। গণ প্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), সংবিধান এবং ভোটার তালিকা আইনে বর্ণিত যোগ্যতা ও অযোগ্যতার কোনোটি লঙ্ঘন না হলে তার ভোটার বা প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা নেই।

তাই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইলে তারেক রহমানকে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটার হতে হবে। একই সঙ্গে জমা দিতে হবে মনোনয়নপত্র।

যা বলছে ভোটার তালিকা আইন

ভোটার তালিকা বিধিমালার ১১ বিধির উপবিধি (১০) অনুযায়ী, কোনো বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশে বসবাস করলে তিনি প্রবাসে বা দেশে ভোটার হওয়ার জন্য ফরম-২ পূরণ করে দেশে বা সংশ্লিষ্ট দেশে রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তার কাছে অথবা অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। ভোটার তালিকা আইনের ১৫ ধারা অনুসারে, কমিশন যেকোনো সময় তালিকাভুক্ত হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে।

১৩ ধারায় বলা হয়েছে-বাংলাদেশি নাগরিকত্ব না থাকলে, আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত হলে, ১৯৭২ সালের কোলাবোরেটর অর্ডার কিংবা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে দণ্ডিত হলে ভোটার হওয়ার যোগ্যতা হারায়। আইনের ৭(১) ধারা অনুযায়ী, ভোটার হতে হলে বয়স ১৮ বছর হতে হবে।

ইসি কর্মকর্তারা বলেন, তফসিল ঘোষণার পরও কমিশন আইনগত যোগ্যতা পূরণকারী যেকোনো নাগরিককে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। চাইলে তারেক রহমান লন্ডন থেকেই ভোটার হতে পারবেন। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে। বিদেশে বসেই তার ভোটার হতে কোনো বাধা নেই।

ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আইন অনুযায়ী কমিশন চাইলে তফসিল ঘোষণার পরও যেকোনো নাগরিককে ভোটার করতে পারে। এই এখতিয়ার আইন কমিশনকে দিয়েছে। সে কারণে তারেক রহমানের ভোটার হতে কোনো বাধা নেই। নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইলে অবশ্যই মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনের মধ্যে তাকে ভোটার হতে হবে। বাংলাদেশের যেকোনো এলাকার ভোটার যেকোনো আসনে প্রার্থী হতে পারেন, যদি তিনি যোগ্যতা না হারান।

প্রার্থী হতে যা প্রয়োজন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, ২৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, কেউ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইলে মনোনয়নপত্র নিজে অথবা প্রস্তাবক বা সমর্থকের মাধ্যমে স্বাক্ষর করে রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে দেশে থাকা বাধ্যতামূলক নয়। তবে প্রার্থী হওয়ার কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা–অযোগ্যতা রয়েছে।

সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ১ ও ২ দফায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হলে এবং বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্য।

তবে কিছু কারণে একজন ব্যক্তি অযোগ্য হতে পারেন। যেমন: আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত হওয়া, ফেরারি আসামি থাকা, দেউলিয়া হয়ে দায়মোচন না পাওয়া, বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করা অথবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করা। তবে বিদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করলে বা ফের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে তিনি যোগ্যতা ফিরে পাবেন।

কোনো অপরাধে দুই বছর নৈতিক স্খলনজনিত বা তার বেশি সাজাপ্রাপ্ত হলে এবং কারামুক্তির পর পাঁচ বছর না পেরোলে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।

১৯৭২ সালের ‘বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশ’র অধীনে দণ্ডিত হলে অথবা প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে থাকলে তিনিও অযোগ্য হবেন। মনোনয়নপত্রে তথ্যগত ঘাটতি থাকলে বা বিভ্রান্তিকর/মিথ্যা তথ্য দিলে মনোনয়নপত্র বাতিল হতে পারে।
 
তারেক রহমান যদি যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব গ্রহণ না করে থাকেন, তবে তার ভোটার হতে কোনো বাধা নেই, বলে ইসি কর্মকর্তারা জানান। তিনি বিদেশ থেকে ভোটার হয়ে প্রার্থী হতে পারবেন। মনোনয়নপত্র ডাকযোগে পাঠানো বা প্রতিনিধি মারফত লন্ডনেই স্বাক্ষর করিয়ে দাখিল করা সম্ভব।

তারেক রহমান বিদেশে বসে ভোটার বা প্রার্থী হবেন কি না-এ আলোচনার মধ্যেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, তিনি শিগগির দেশে ফিরে আসবেন।

তারেক রহমান দেশে এসে ভোটার হবেন বলে জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এতে কোনো সমস্যা হবে না।  কোনো জটিলতা তৈরি হবে না তারেক রহমানের ভোটার হওয়ার সময়সীমা নিয়ে।

মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৯ ডিসেম্বর
মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত; আপিল দায়েরের শেষ সময় ১১ জানুয়ারি; আপিল নিষ্পত্তি ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি; প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি। প্রচার কার্যক্রম চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
‘লাইফ সাপোর্টে’ হাদি
‘লাইফ সাপোর্টে’ হাদি
সব মানুষ বিএনপির রাজনীতিতে আশ্রয় নিতে পারবে : সালাহউদ্দিন
সব মানুষ বিএনপির রাজনীতিতে আশ্রয় নিতে পারবে : সালাহউদ্দিন
ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি
ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি