হয়রানি মূলক মামলা থেকে জামিন পেলেন সাংবাদিক ইয়াসিন মাহমুদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বহুল আলোচিত সমালোচিত বাখরাবাদ গ্যাসফিল্ডের করা মিথ্যা মামলায় অবশেষে জামিন পেয়েছেন অনুসন্ধান মূলক জাতিয় পত্রিকা
"দৈনিক অগ্রযাত্রা প্রতিদিনের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার সাংবাদিক ইয়াসির মাহমুদ।
গত,১০,ডিসেম্বর২০২৫ তারিখ ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এই জামিনের মধ্য দিয়ে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাময়িক স্বস্তি পেলেন তিনি এবং সাংবাদিক সমাজও, বিষয়টিকে ন্যায়বিচারের ক্ষুদ্র বিজয় হিসেবে দেখছেন অনেকেই।
গত,৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির লিকেজ সনাক্তের নামে একটি টিম ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেড্ডা পৌর কলেজ সংলগ্ন এলাকায় লিকেজ সনাক্তের নামে অভিযান পরিচালনার নামে, অর্থ তুলার অভিযোগ পেয়ে সাংবাদিক ইয়াসিন মাহমুদ সহ আরো কয়েকজন স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মীরা সংবাদ সংগ্রহে যান।
এ বিষয়ে এলাকাবাসীরা জানায় বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে তারা তথ্য সংগ্রহ করছিলেন। কিন্তু পরে হঠাৎ করেই জানা যায় সাংবাদিক ইয়াসির মাহমুদকে জড়িয়ে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেখানে অভিযোগ আনা হয়েছে তিনি নাকি “সরকারি কাজে বাধা” সৃষ্টি করেছেন।
উক্ত মামলাটি তৎকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার মোট চারজনকে আসামি করা হয়।
মামলা দায়ের হওয়ার পরপরই সাংবাদিক ইয়াসিন মাহমুদ প্রকৃত ঘটনার সত্যটা তুলে ধরেন এবং সেই নিউজের আলোকে বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির ডিজিএম শাহালম অন্য জেলায় বদলি হতে হয়।
দীর্ঘদিন আইনি লড়াইয়ের পর জামিন পেয়ে সাংবাদিক ইয়াসির মাহমুদ জানান, “আমি তো সংবাদ সংগ্রহে গিয়েছিলাম আমার সঙ্গে একাধিক সহকর্মী ও উপস্থিত ছিলেন আমাকে অপরাধী বানানোর আসল কারণ কি? আমি যেনো তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি জাতির সামনে তুলে না ধরতে পারি তাই আমাকে মিথ্যা অভিযোগদ দিয়ে আসল সত্য কে ধামাচাপা দিতেই এমন কৌশল অবলম্বন করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। প্রকৃত বাস্তবতার সাথে
মামলার কোনো অভিযোগই উপস্থিত গনমাধ্যম কর্মীরা এবং এলাকাবাসীর তথ্য মতে সামান্যতম মিল নেই।
তিনি আরও বলেন,“আমাকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি কুচক্রী মহল নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এর ফলে আমি অসহনীয় মানসিক চাপে আছি। আমার নিরাপত্তা এখন হুমকির মুখে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যদি আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা না দেয়,তাহলে যেকোনো সময় আমার বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি সম্ভাবনা রয়েছে।
ইয়াসির মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, বাখরাবাদ গ্যাসফিল্ডের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করছিলেন এবং সাবেক যুবলীগ নেতা মহসীন খন্দকারের বিরুদ্ধে ও অবৈধ গ্যাস সংযোগের প্রতিবেদন করেছিলেন। সেই প্রতিবেদনে গ্যাস চুরি,আর্থিক অনিয়ম, দায়িত্বে অবহেলা ও ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, এসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই একটি স্বার্থান্বেষী চক্র নানা ভাবে আমাকে হয়রানির চেষ্টা করে আসছে। মামলাটি হয়তোবা সেই সব চক্রেরই অংশ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আমি সত্য, ন্যায় এবং দেশপ্রেমে বিশ্বাসী একজন সাধারণ সংবাদকর্মী। আমার পেশা আমাকে শিখিয়েছে জনস্বার্থই আসল সংবাদ। আমি সব সময় দেশ এবং জনগণের পক্ষে কাজ করেছি। কিন্তু এজন্য আমাকে যদি অন্যায়ভাবে শাস্তি পেতে হয়, তাহলে তা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য একটি বড় ধরনের হুমকি স্বরূপ।
ইয়াসিন মাহমুদ আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত আমাকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দিয়েছে। আমি আদালতের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি চাই,এই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটিত হোক।
এ ঘটনার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংবাদিক সমাজ প্রতিবাদ জানিয়ে বলছে,সমাজের দুর্নীতি, অনিয়ম ও অসঙ্গতি তুলে ধরাই সাংবাদিকদের কাজ। আর সেই কাজ করতে গিয়েই যদি সাংবাদিকরাই হয়রানির শিকার হয়,তবে জনগণের জানার অধিকার ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তারা আরো বলেন, “একজন সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর চেষ্টা দ্রুত বন্ধ হওয়া জরুরি”
স্থানীয় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিবৃতিতে জানায়, “সাংবাদিক ইয়াসিন মাহমুদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানিমূলক। আমরা দ্রুত মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।”
এদিকে এলাকায় সাধারণ মানুষও বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ প্রকাশ করে বলেন; বাখরাবাদ গ্যাসফিল্ডের অনিয়ম দুর্নীতি আড়াল করতেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। যা স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর এক কলঙ্কিত অধ্যায় বলে অনেকেই মনে করছেন।তারা আরো বলেন,সাংবাদিকদের স্বাধীনতাই সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রথম শর্ত।একজন সাংবাদিক আক্রমণের শিকার হলে প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব ও অধিকার ক্ষুণ্ন হয়।
ইয়াসির মাহমুদ তার বক্তব্যের শেষ অংশে বলেন, “পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই আমি এই ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছি। আমি চাই না কোনো সাংবাদিক বা সাধারণ মানুষ যেনো এমন হয়রানির শিকার না হয়। আশা করি দেশের সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।
ঘটনার পর সাময়িক স্বস্তি পেলেও সাংবাদিক মহল মনে করছে এই মামলার ন্যায়সঙ্গত নিষ্পত্তিই পারে সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে আরও সুদৃঢ় করতে।
ভিওডি বাংলা/এম







