২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ২৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার ১২ ডিসেম্বর রাতে খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। এর আগে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান; কোটি কোটি মানুষের প্রিয় নেতা তারেক রহমান, যিনি প্রায় ১৮ বছর ধরে নির্বাসিত অবস্থায় ছিলেন, এবং যিনি দীর্ঘ সময় ধরে গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন, তিনি আগামী ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার মাটিতে আমাদের মাঝে এসে পৌঁছাবেন। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তার নেতৃত্বে দেশের জনগণের মাঝে নতুন আশা জেগে উঠবে।
তিনি বলেন, দলের পক্ষ থেকে এবং দেশের সর্বস্তরের মানুষের পক্ষ থেকে তারেক রহমানের আগমনকে শুধু স্বাগত জানানো হবে না; এটি একটি আনন্দঘন ও ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে গণ্য হবে। গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যে সব বাধা এখনও রয়ে গেছে, তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসার মাধ্যমে সেসব বাধা অচিরেই দূর হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল তা কাটিয়ে উঠেছে। গতকাল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া এগিয়ে চলেছে এবং এতে দেশের মানুষের মধ্যে আশা-প্রত্যাশা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা শিগগিরই বাস্তবে রূপ নেবে।
ওসমান হাদি-এর ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনাকেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এ ঘটনাটি সম্পর্কে বিএনপি সাথে সাথেই নিন্দা জানিয়েছে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও বিষয়টিকে কঠোরভাবে নিন্দা করেছেন। পার্টির পক্ষ থেকে হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইন-আদালতের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।
এ সময় দলের সিনিয়র নেতা ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ঘটনাস্থলে যাওয়ার বিষয়টিও উত্থাপিত হয়। উপস্থিতির কারণে কয়েকজন উত্তেজনামূলক আচরণ ও স্লোগান দেয়- যা তিনি তীব্রভাবে নিন্দা করেন এবং হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, এমন আচরণ কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
তিনি সবাইকে অনুরোধ করেন কোনো ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি না করে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সকলকে সহযোগিতা করতে। না হলে গণতন্ত্রের যাত্রা ব্যাহত হবে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বিভিন্ন মামলায় তারেক রহমানের সাজা বাতিল হয় এবং কিছু মামলায় আইনি প্রক্রিয়ায় অব্যাহতি পান। এরপর থেকে দেশে ফেরার বিষয়টি সরগরম ছিল।
গত অক্টোবরের শেষে বিএনপি জানিয়েছিল, তারেক রহমান নভেম্বর মাসের মধ্যেই দেশে ফিরবেন বলে তারা আশা করছে। কিন্তু নভেম্বরে তিনি ফেরেননি। নভেম্বরে শেষ দিকে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি ও তার শারীরিক অবস্থার অবনতির পরও তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। ওই সময় ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে তারেক রহমান বলেছিলেন, মায়ের অসুস্থতার মধ্যেও তার দেশে ফেরার বিষয়ে 'সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়'।
অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথে কোনো বাধা নেই।
কেন তিনি দেশে ফিরতে পারছিলেন না সে বিষয়ে তার বা তার দলের পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি। যদিও ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল হলে 'পরিস্থিতি যাই হোক' তিনি দেশে ফিরবেন- এমন আভাস দিয়েছিলেন বিএনপির নেতারা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতা নেওয়া সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে আটক হয়ে ১৮ মাস কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছিলেন তারেক রহমান। এক সপ্তাহ পরে, ১১ই সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে পরিবারের সদস্যদেরকে সাথে নিয়ে ঢাকা ছেড়েছিলেন তিনি।
ভিওডি বাংলা/ সবুজ/ এমএম





