যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সন্দিহান জেলেনস্কি

ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিতে সপ্তাহান্তে জার্মানি সফরে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ। সফরকালে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছেন উইটকফ। বার্লিনে প্রস্তাবিত শান্তিচুক্তির সর্বশেষ সংস্করণ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে আসন্ন বড়দিনের আগেই একটি চুক্তি কার্যকর হোক। এ লক্ষ্যেই গত কয়েক সপ্তাহে কিয়েভ ও মস্কোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক দফা আলোচনা হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
বার্লিনের আলোচনায় কোন কোন ইউরোপীয় নেতা অংশ নেবেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। তবে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মারজ উপস্থিত থাকতে পারেন।
উইটকফ ও জেলেনস্কির বৈঠক নিশ্চিত হওয়ার খবর আসে এমন সময়, যখন কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার সংশোধিত সংস্করণ জমা দিয়েছে ইউক্রেন। নভেম্বরের শেষ দিকে প্রথম প্রকাশ পাওয়া এই পরিকল্পনার সর্বশেষ রূপ ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছে।
আলোচনার অন্যতম জটিল বিষয় হয়ে রয়েছে পূর্ব ইউক্রেনের ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ। কিয়েভ অবৈধভাবে দখল করা কোনও ভূমি ছাড়তে রাজি নয়। অন্যদিকে মস্কো হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইউক্রেন সরে না গেলে তারা বলপ্রয়োগে পুরো ডনবাস অঞ্চল দখল করবে।
ভূখণ্ড সংক্রান্ত হোয়াইট হাউজের সর্বশেষ প্রস্তাব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি। প্রস্তাব অনুযায়ী, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে সরে যাবে এবং অঞ্চলটিকে ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ ঘোষণা করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এর বিনিময়ে রাশিয়া অঙ্গীকার করবে যে তারা ওই এলাকায় অগ্রসর হবে না, ফলে অঞ্চলটি কার্যত সামরিকীকরণমুক্ত থাকবে।
তবে এই প্রস্তাব নিয়ে প্রকাশ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন জেলেনস্কি। তার ভাষায়, ভবিষ্যতে রাশিয়ার আগ্রাসন বা ছদ্মবেশে অনুপ্রবেশ কীভাবে ঠেকানো হবে—তা স্পষ্ট নয়।
এদিকে কিয়েভের মিত্ররা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন আলোচনাগুলো পুরোপুরি ব্যর্থ হয়নি। শুরুতে পরিকল্পনাটি রাশিয়ামুখী মনে হলেও, পরবর্তীতে সংশোধনী আনার ক্ষেত্রে অগ্রগতির প্রশংসা করেছে তারা।
তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এমন ইঙ্গিত মিলছে যে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও ইউরোপীয় মিত্রদের প্রতি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ধৈর্য কমে আসছে। চলতি সপ্তাহে পলিটিকোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় নেতাদের ‘দুর্বল’ আখ্যা দিয়ে তিনি ইউক্রেনে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
জেলেনস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ যদি প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেয়, তাহলে ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ অভিযান শুরুর পর সামরিক আইন জারির কারণে ইউক্রেনে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।
ভিওডি বাংলা/ আ







