বিভাজন সৃষ্টি করা যাবে না: ঢাবি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো পরস্পরবিরোধী নয়। বরং এসব ঘটনা বাংলাদেশের জাতীয় সত্তা ও ইতিহাস গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ইতিহাসকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে বিভাজন সৃষ্টির যে রাজনৈতিক অপচেষ্টা চলছে, সে বিষয়ে জাতিকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ কেবল স্মরণীয় ইতিহাস নয়, এটি আমাদের জাতীয় ঐক্য, পরিচয় ও অস্তিত্বের ভিত্তি। যতদিন এই আত্মত্যাগ আমাদের স্মৃতিতে জীবিত থাকবে, ততদিন জাতি হিসেবে আমাদের ঐক্য অটুট থাকবে।
তিনি আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস শুধু আনুষ্ঠানিক কোনো দিবস নয়; এটি আত্মত্যাগের দায় স্বীকার করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ একটি কঠিন ও ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এ সময়ে শহীদদের স্মৃতি আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি আমাদের ঋণের কিছুটা হলেও শোধ করতে পারেন বলে মন্তব্য করেন উপাচার্য।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এসব আয়োজন শুধু স্মরণ নয়, বরং ঋণ স্বীকার ও দায়িত্ব পালনের একটি সম্মিলিত অঙ্গীকার।
আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শহীদ গিয়াস উদ্দিন আহমদের ছোট বোন অধ্যাপক সাজেদা বানু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু এবং ডাকসু ভিপি আবু সাদিক কায়েমসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ।
এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউট পরিচালক, প্রক্টর, প্রভোস্ট, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার শুরুতে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণের কবরস্থান, জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণের স্মৃতিসৌধ, বিভিন্ন আবাসিক এলাকার স্মৃতিসৌধ এবং মিরপুর ও রায়ের বাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল মসজিদে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া এবং বিভিন্ন উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
ভিওডি বাংলা/জা






