বাংলাদেশের মানুষ অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পথে চলবেন, নাকি অতীতে স্বাধীনতার বিরোধিতা করা শক্তিকে মান্যতা দেবেন।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (আইইবি)-এ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মহান বরেণ্য বুদ্ধিজীবী এবং সকল মেধাবী মানুষদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘‘যারা স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং যুদ্ধের পরে দেশটি কীভাবে গড়ে তোলা যাবে, সেই স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া বীর শহীদদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘‘আজ আমরা এমন একটি সময় এই দিবসটি পালন করছি, যখন আমরা একটি ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে, গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে এগিয়ে চলেছি। সেই সঙ্গে গণতন্ত্রকে ব্যাহত করার জন্য বিভিন্ন চক্রান্ত সৃষ্টি হচ্ছে। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী দেশের মেধাবী বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, অধ্যাপক ও চিকিৎসকদের বেছে বেছে হত্যা করেছিল। তবে তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয় এবং দুই দিন পরে তারা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।’’
ফখরুল দেশের ঐতিহাসিক লড়াই এবং মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ স্মরণ করিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না। ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যার পরও আমরা লড়াই করেছি, অধিকার আদায় করেছি, স্বাধীনতা রক্ষা করেছি। সেই ঐতিহ্যই আমাদের শক্তি।’’
তিনি বলেন, গণতন্ত্র মানে পরম সহিষ্ণুতা। আমি তোমার মতের সঙ্গে একমত নাও হতে পারি, কিন্তু মত প্রকাশের স্বাধীনতা আমি রক্ষা করব আমার রক্তবিন্দু দিয়ে। সেটিই হলো গণতন্ত্র। ষড়যন্ত্র করে কেউ সাফল্য অর্জন করতে পারে না। সত্য ও সঠিক পথে লড়াই করে সংগ্রাম করা ব্যক্তিরাই সাফল্যের দিকে যেতে পারে।’’
আজকের দিনটির গুরুত্ব তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ‘আমরা আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী গণতান্ত্রিক, উদারপন্থী বাংলাদেশ নির্মাণের পথে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের লক্ষ্য শহীদ জিয়ার স্বপ্নের বাংলাদেশ, দেশনেত্রী খালেদার স্বপ্নের বাংলাদেশ এবং তারেক রহমানের ৩১ দফার বাংলাদেশ।’
তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা বেগম খালেদা জিয়া এবং মুক্তিযুদ্ধের অগণিত শহীদদের স্মরণ করে বলেন, ‘আমি আজ আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যে আমাদের চেয়ারপার্সন, যিনি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে রয়েছেন, দ্রুত সুস্থ হোন।’
ফখরুল দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। তবে আগামী ২৫ ডিসেম্বর আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদের মাঝে উপস্থিত হবেন। আমরা সেই দিন তাকে এমন সম্বর্ধনা জানাব যা অতীতে কোনো নেতা পাননি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হলো জাতীয়তাবাদী আদর্শ, গণতন্ত্র এবং শহীদদের ত্যাগের স্মৃতি ছড়িয়ে দেওয়া। আসুন আমরা সবাই সবাইকে ভালোবেসে, নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি। ধানের শীষের জয় নিশ্চিত করব।’
আলোচনা সভায় মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আরও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
ভিওডি বাংলা/জা





