পরিকল্পিত
হত্যাকাণ্ডকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

কিশোরগঞ্জে পূর্ব শত্রুতা ও মামলা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রিকশাচালক আঃ ছালামকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের ছেলে ও মামলার বাদী মো. মতিউর রহমান। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নিহতের স্বজন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
সংবাদ সম্মেলনে মো. মতিউর রহমান বলেন, আমার বাবা আঃ ছালাম ছিলেন একজন সাধারণ রিকশাচালক। এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির অন্যায় ও অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি নির্মম হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-১ মামলাটি আমলে নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ঘটনার কয়েক মাস আগে অভিযুক্তদের একজন নিহতের পুত্রবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার জেরে আসামিরা ক্ষুব্ধ হয়ে নিহত আঃ ছালাম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ পোষণ করে এবং একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
মামলার এজাহার ও সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী, গত ২৫ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকাল আনুমানিক ৫টার পরে কিশোরগঞ্জ শহরের লতিবাবাদ দক্ষিণপাড়া এলাকায় হিমাগার রোডে হারুনের বাড়ির উত্তর পাশে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত আঃ ছালাম কিশোরগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর জন্য খাবার নিয়ে সাইকেলযোগে যাওয়ার পথে পূর্বপরিকল্পিতভাবে কয়েকজন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার গতিরোধ করে। এরপর তাকে ঘিরে ধরে দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীরা একপর্যায়ে ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আঃ ছালামকে টেনে-হেঁচড়ে হাইওয়ে রোডে নিয়ে গিয়ে চলন্ত গাড়ির নিচে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে তার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে আসামিরা তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় গুরুতর আহত অবস্থায় আঃ ছালামকে প্রথমে কিশোরগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে নেওয়ার পথে তিনি হামলার বিস্তারিত বিবরণ দেন বলে দাবি করেন স্বজনরা। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ২৬ নভেম্বর ভোরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে মো. শহীদ মিয়া (৫০), মো. সাদেক মিয়া (২২), মো. সোহেল মিয়া (৩৫), মো. সুজন মিয়া (৪০), মো. এরশাদ মিয়া (৩৫) ও উজ্জল মিয়া (৪৫)। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার পর দীর্ঘ সময় পার হলেও এখনো কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা হয়নি। এতে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পরিবারটির দাবি, দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার না হলে তারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশাসনের প্রতি অবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তার, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
ভিওডি বাংলা/ মোঃ ওমর সিদ্দিক রবিন/ আ






