প্রার্থী ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দিতে নীতিমালা জারি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রার্থী ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ও সশস্ত্র রক্ষী নিয়োগে একটি নীতিমালা জারি করেছে করেছে সরকার।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জুলাইয়ের সম্মুখ সারির যোদ্ধা, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা এবং নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রতিরোধে রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ও রিটেইনার নিয়োগের লক্ষ্যে সরকার এই নীতিমালা প্রণয়ন ও জারি করেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, শুধু আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে সীমিত ক্যালিবারের (এনপিবি) অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে। কোনো ব্যক্তি বা প্রার্থীকে একাধিক লাইসেন্স প্রদান করা হবে না এবং স্বরাষ্ট্র বা সামরিক অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান করা হবে না।
লাইসেন্স প্রাপ্তির যেগ্যাতা
লাইসেন্স পাওয়ার জন্য সরকার কর্তৃক স্বীকৃত রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হতে হইবে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করিতে হইবে। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে গোলাবারুদ সহ আগ্নেয়াস্ত্র রাখিবার নিরাপত্তা ঝুঁকি বিদ্যমান থাকিতে হইবে। শারীরিক ও মানসিক সুস্থ থাকতে হবে। অস্ত্র সংরক্ষণের নিরাপদ ব্যবস্থা থাকতে হবে। এই নীতিমালার অধীনে লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে এ-সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত অন্যান্য নীতিমালা ও বিধান প্রযোজ্য হইবে তবে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র প্রদান সংক্রান্ত অংশ শিথিলযোগ্য হবে।
লাইসেন্সের মেয়াদ
নীতিমালার আওতায় অনুমোদনকৃত লাইসেন্সের মেয়াদ নির্ধারণে ফলাফল ঘোষণার তারিখ থেক পরবর্তী ১৫ দিন। এই সময়ের পর প্রত্যেক লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলিয়া গণ্য হবে। তবে, লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য প্রযোজ্য নীতিমালার অন্যান্য শর্ত পূরণ হইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সাময়িক লাইসেন্সকে সাধারণ লাইসেন্সে রূপান্তর করতে পারবে। লাইসেন্সের মেয়াদ অতীত হলে বা লাইসেন্স বাতিল হওয়ার পরও কোনো লাইসেন্সধারী উক্ত লাইসেন্সের বিপরীতে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নিজ দখলে রাখলে তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হবে।
রিটেইনার নিয়োগের শর্ত
নীতিমালায় বলা হয়েছে, কেবল প্রকৃত নিরাপত্তাঝুঁকি থাকলে রিটেইনার নিয়োগ অনুমোদন করা হবে; রাজনৈতিক কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে কিংবা ভয়ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে রিটেইনার নিয়োগ করা বা অনুমোদন করা যাবে না; কোনো রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থী লাইসেন্স প্রাপ্তির যোগ্য হলে এবং তিনি আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয়ে অসমর্থ হলে বা অনিচ্ছুক হলে বৈধ লাইসেন্সসহ আগ্নেয়াস্ত্র আছে, তা পরিচালনায় সক্ষম এবং কোনো রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থীর রিটেইনার হতে ইচ্ছুক, এমন কোনো ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ রিটেইনার নিয়োগ করতে পারবেন। এই নিয়োগ লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।
আচরণবিধি
এই নীতিমালার আওতায় আগ্নেয়াস্ত্র নিলে কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। এ বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, অস্ত্র বহনকালে সর্বদা লাইসেন্স এবং অনুমোদন সঙ্গে রাখতে হবে; এই অস্ত্র ব্যবহার করে কাউকে ভয়ভীতি প্রদর্শন বা হয়রানি করা যাবে না; নিরাপত্তা ছাড়া অন্য কোনো কাজে বা উদ্দেশ্যে এই লাইসেন্সের আওতাভুক্ত অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না; এই লাইসেন্স এবং লাইসেন্সভুক্ত অস্ত্র হস্তান্তর করা যাবে না; প্রত্যেক লাইসেন্সধারীর জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশ তাৎক্ষণিকভাবে পালন বাধ্যতামূলক হবে।
ভিওডি বাংলা/ এমএম
