ফোন বা ভিডিও কলে বিয়ে: কতটুকু বৈধ?

প্রযুক্তির উৎকর্ষে পৃথিবীর এক প্রান্তে থাকা মানুষ এখন মুহূর্তেই যোগাযোগ করতে পারছে অন্য প্রান্তে থাকা প্রিয়জনের সঙ্গে। দূরত্ব আর বড় বাধা নয়। এরই ধারাবাহিকতায় ফোন বা ভিডিও কলে নিকাহ সম্পাদনের ঘটনাও ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে-এ ধরনের বিয়ে কি ইসলামি শরিয়াহ ও আইনের দৃষ্টিতে বৈধ?
ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি
ইসলামি ফিকহ অনুযায়ী, বর বা কনের পক্ষ থেকে বৈধ প্রতিনিধির (ওয়াকিল) মাধ্যমে যথাযথভাবে ইজাব ও কুবুল সম্পন্ন হলে এবং প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ হলে নিকাহ বৈধ হতে পারে। কিছু আলেমের মতে, সরাসরি উপস্থিতি না থাকলেও প্রতিনিধি ব্যবস্থার মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা জায়েজ।
তবে শাফি মাযহাবের দৃষ্টিতে ভিডিও বা টেলিফোনের মাধ্যমে সরাসরি নিকাহ অনৈতনিক। কারণ এতে উপস্থিতির গুরুত্বপূর্ণ শর্ত-দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতি, ইজাব-কুবুল এবং ওয়ালির ভূমিকা-সঠিকভাবে নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশের আইন কী বলে
বাংলাদেশে নিকাহ বৈধ হতে হলে কয়েকটি মৌলিক শর্ত পূরণ করা আবশ্যক। এর মধ্যে রয়েছে-
ইজাব ও কুবুল;
ন্যূনতম দুইজন সাক্ষী;
ইমাম বা বৈধ ব্যাক্তির মাধ্যমে
স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি ও প্রয়োজনীয় রেজিস্ট্রেশন
রেজিস্ট্রেশনের অভাব স্বচ্ছতা নষ্ট করে না
প্রয়োজনীয় রেজিস্ট্রেশন
আইন বিশ্লেষকদের মতে, নিকাহ রেজিস্ট্রেশন আইনি স্বীকৃতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও কেবল রেজিস্ট্রেশন না থাকায় বিয়ের শরয়ি বৈধতা নষ্ট হয় না।
আন্তর্জাতিক দৃষ্টান্ত
যুক্তরাষ্ট্রের একটি মামলায় দেখা গেছে, টেলিফোনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত নিকাহকে বৈধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আদালতের মতে, যেহেতু বিয়েতে ইসলামী শর্তগুলো পূরণ করা হয়েছিল, তাই রেজিস্ট্রেশন না থাকলেও নিকাহ বাতিল হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ধর্মীয় ও আইনি উভয় দিক বিবেচনায় রেখে সতর্কতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়াই উত্তম।
ভিওডি বাংলা/জা





