নবাবগঞ্জে বিলীনের পথে প্রাচীন যুগের নিদর্শন

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রাচীন যুগের বেশকিছু ঐতিহাসিক নিদর্শনের স্থাপনা। কোনো কোনো স্থানে মাটির নিচেও লুকিয়ে আছে এরকম স্থাপনা। রয়েছে অনেক ঢিবি যা খনন করলে কিছু উন্মোচন হতে পারে। অনেক স্থাপনা বিলীনের দিকে যেতে বসেছে। এরকম স্থাপনা ও টি-বিগুলো রক্ষাসহ সংরক্ষণ করা প্রয়োজন বলে প্রত্নতত্ত্ববিদগণ মত পোষণ করেন।
উল্লেখযোগ্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের সীতাকোট বৌদ্ধ বিহার, মুনির থান, মাহমুদপুর ইউনিয়নের দারিয়ায় অরুনধাপ বা বেহুলার বাপের বাড়ী, বেহুলার বাসর ঘর, ঢিবি হরিনাথপুর, দূর্গ হলাইজানা, তেলিপাড়া মসজিদ, দাউদপুর ইউনিয়নে জিগাগড় দূর্গ, পুটিমারা ইউনিয়নে টঙ্গি ঢিবি, দলার দরগা মঠ, ভাদুরিয়া ইউনিয়নে নিম্ন পলাশবাড়ী মঠ।
দিনাজপুর জেলার সাবেক জেলা প্রশাসক আবুল কালাম মোঃ যাকারিয়া-এর মতে, সমগ্র এলাকাটি ছিল প্রাচীন একটি জনপদ ও বৌদ্ধ ধর্মীয় সাংস্কৃতি কেন্দ্র। এখানে একাধিক বৌদ্ধ বিহার ও স্তূপ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রত্নসম্পদ গ্রন্থের উদ্ধৃতি দিয়ে লেখক আব্দুল আজিজ-এর নবাবগঞ্জের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে লেখা একটি বই থেকে এ তথ্য জানা যায়। বাংলাদেশ প্রত্নসম্পদ গ্রন্থের মতে তিনি লিখেছেন, উপজেলার মাহমুদপুর এলাকায় ১৯৬০ সালের আগে মোট ঢিবি ছিল ১০০টি, যা ১৯৬৭ সালে কমে দাঁড়ায় ৫১টিতে। সেগুলোর মধ্যে অনেক ঢিবিই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
অরুনধাপের অস্তিত্ব:
১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের পরীক্ষামূলক খননের পর অরুনধাপে বগুড়ার লখিন্দরের মেড় সদৃশ্য একটি পুরাকীর্তির অস্তিত্ব ঢিবির তলদেশে বিদ্যমান দেখা গেছে। সেখানে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে একটি সাইন বোর্ড দিয়ে রাখা হয়েছে।
খয়েরগনি বৌদ্ধ বিহার:
এদিকে দাউদপুর ইউনিয়নের খয়েরগনি নামক স্থানে ২০০৬ সালে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের খনন দল খনন করে বৌদ্ধ বিহারের স্থাপনার অস্তিত্ব পেয়েছিলেন। ওই সময় অর্থের অভাবে সেটি আর পুরো খনন করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সেটি মাটির নিচে পড়ে আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, এসব স্থাপনা সংরক্ষণ করা তো বটেই, এছাড়াও সেগুলো নিয়ে চর্চা করা যেতে পারে। এসব ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা গেলে একদিকে যেমন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইতিহাস জানতে পারবে, অপরদিকে তেমনি এলাকায় পর্যটকদের আগমন ঘটবে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।
ভিওডি বাংলা/ অলিউর রহমান মিরাজ/ আ







