লাল-সবুজে মোড়ানো কফিনে দেশে ফিরছেন ওসমান হাদি

‘সাধারণ একটা কফিনে হাসিমুখে আমি আমার আল্লাহর কাছে হাজির হবো’—এমন আকাঙ্ক্ষাই প্রকাশ করেছিলেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। দেশি ও বিদেশি হাসপাতালে টানা সাতদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই শেষে অবশেষে নিভে গেছে তার প্রাণ। লাল-সবুজে মোড়ানো কফিনে নিথর দেহে দেশে ফিরছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম এই নায়ক।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে কফিনবন্দি একটি ছবি ও পোস্ট প্রকাশ করা হয়। সেখানে লেখা হয়,
‘হারাম খাইয়া আমি এত মোটাতাজা হই নাই, যাতে আমার স্পেশাল কফিন লাগবে! খুবই সাধারণ একটা কফিনে হালাল রক্তের হাসিমুখে আমি আমার আল্লাহর কাছে হাজির হবো।’
গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগেই এমন মন্তব্য করেছিলেন ওসমান হাদি। তার সেই কথাই এখন নতুন করে আবেগঘন আলোচনার জন্ম দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পোস্টটি প্রকাশের আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই এতে ৩ লাখ ৪৫ হাজার রিঅ্যাক্ট, ১৪ হাজারের বেশি মন্তব্য এবং ২৭ হাজারের বেশি শেয়ার দেখা যায়। অসংখ্য নেটিজেন তাদের টাইমলাইনে পোস্টটি শেয়ার করে শোক প্রকাশ করছেন।
জানা গেছে, স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে ওসমান হাদির লাশবাহী ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটির অবতরণের কথা রয়েছে। শনিবার জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, গুলি তার মাথার ডান দিক দিয়ে ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। পরে পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
সবশেষ ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
ভিওডি বাংলা/ আরিফ







