গাজায় ধ্বংসস্তূপের নিচে মিলছে মরদেহ

দীর্ঘ দুই বছরের ভয়াবহ যুদ্ধের ক্ষত এখনো দগদগে গাজা উপত্যকায়। যুদ্ধবিরতির দুই মাস পর ধ্বংসস্তূপ অপসারণের কাজ শুরু হতেই বেরিয়ে আসছে একের পর এক নিহতের দেহাবশেষ।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) গাজা সিটির বিভিন্ন এলাকায় ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে একদিনেই ৯৪ জনের দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়, উদ্ধারকৃত দেহাবশেষগুলো গাজার প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে দেইর আল-বালাহ এলাকার শহীদ কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া সবাই ইসরায়েলি বিমান হামলায় ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়ে নিহত হন। তীব্র সংঘর্ষের সময় তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলোর মধ্যে একই পরিবারের একাধিক সদস্য থাকার তথ্যও পাওয়া গেছে।
কর্তৃপক্ষের ধারণা, গাজাজুড়ে এখনো হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন এবং অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান চালানো গেলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ভারী যন্ত্রপাতির অভাব ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া এই সংঘাতের দুই বছরে গাজায় মানবিক বিপর্যয় চরম আকার ধারণ করেছে। ইসরায়েলি হামলায় হাসপাতাল, স্কুল ও আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিস্তীর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের বড় অংশ নারী ও শিশু।
গাজাজুড়ে প্রায় ৬১ মিলিয়ন টন ধ্বংসাবশেষ জমে আছে, যা পরিষ্কার করা একটি বিশাল মানবিক ও অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ। ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু হলেও প্রতিটি ধ্বংসাবশেষ গাজার মানুষের জন্য এক করুণ স্মৃতির ভার বহন করছে।
ভিওডি বাংলা/জা






