• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

২৮৬ মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছিল সাড়ে ৪ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক    ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৮ পি.এম.
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে  অভিযোগ গঠনের শুনানিতে এ তথ্য দেন তাজুল ইসলাম-ছবি: সংগৃহীত

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, ২৪ জুলাই-আগস্ট আন্দোলন দমনকালে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নির্দেশে ২৮৬টি মিথ্যা মামলায় সাড়ে চার লাখ ছাত্র-জনতাকে আসামি করা হয়েছিল।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কারফিউ দিয়ে গণহত্যায় উসকানির দায়ে মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিতে এ তথ্য জানান তিনি। 

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের প্যানেলে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অপর সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। এসবের ওপর শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর। প্রথমেই সালমান ও আনিসুলের ব্যক্তিগত দায় পড়ে শোনান তাজুল ইসলাম। একপর্যায়ে তাদের একটি ফোনালাপ বাজিয়ে শোনানো হয়। ফোনালাপটি ২০২৪ সালের ১৯ জুলাইয়ের। এরপরই সুনির্দিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ আলাদা আলাদা পড়েন তিনি।

প্রথমত চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলন দমনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতেন সালমান ও আনিসুল। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ১৯ জুলাই ফোনে কথা বলেন তারা। তাদের কথোপকথনের একপর্যায়ে শোনা যায় ওদের শেষ করে দেওয়া। অর্থাৎ আজ রাতেই কারফিউ জারির মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের শেষ করে দিতে হবে বলে জানান সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

এরই ধারাবাহিকতায় ২২ জুলাই ব্যবসায়ীদের নিয়ে গণভবনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন সালমান এফ রহমান। ওই বৈঠকে জীবন দিয়ে হলেও হাসিনার পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যেই আইনমন্ত্রীর নির্দেশে ২৮৬টি মিথ্যা মামলা করা হয়। যেখানে সাড়ে চার লাখ ছাত্র-জনতাকে আসামি করা হয়েছিল। তাদের এমন ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র ও প্ররোচনায় প্রাণ দিয়েছেন বহু ছাত্র-জনতা। তবু নির্যাতন বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি তারা।

দ্বিতীয়ত সালমান-আনিসুলের জ্ঞাতানুসারে ২৩ জুলাই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অর্থাৎ তাদের প্ররোচনা-উসকানিতে মিরপুরে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দলীয় বাহিনী।তৃতীয়ত মারণাস্ত্র ব্যবহারে প্ররোচনা ও ষড়যন্ত্র করেছিলেন এই দুই প্রভাবশালী। 

তাদের উসকানি ও সহায়তায় ২৮ জুলাই মিরপুর-১০ এ আক্তারুজ্জামানকে জীবন দিতে হয়। আহত হন আরও অনেকে। চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়, কারফিউ জারির মাধ্যমে মারণাস্ত্র ব্যবহারে উসকানি-প্ররোচনায় ৪ আগস্ট মিরপুর-১ এ আকাশ, সেতু, আলভীসহ ১২ জনকে হত্যা করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। 

এরপর ২২ জুলাই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের নির্দেশে ২৮৬টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এতে সাড়ে চার লাখ ছাত্র-জনতা আসামি হন। তাদের উসকানি ও নির্দেশে ২৩, ২৮ জুলাই এবং ৪, ৫ আগস্ট মিরপুরে হত্যাকাণ্ড ও আক্রমণ চালানো হয়।

মামলার শুনানির সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী শুনানির সময় চেয়ে আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল আগামী ৪ জানুয়ারি আসামিপক্ষের জন্য সময় ধার্য করেছেন।

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জামিন বিতর্কে আসিফ নজরুলের বক্তব্য একতরফা
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জামিন বিতর্কে আসিফ নজরুলের বক্তব্য একতরফা
৫ দিনের রিমান্ডে সুব্রত বাইনের মেয়ে খাদিজা
৫ দিনের রিমান্ডে সুব্রত বাইনের মেয়ে খাদিজা
কাদেরসহ ৭ নেতার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল
জুলাই হত্যাযজ্ঞ: কাদেরসহ ৭ নেতার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল