পুত্রবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ শ্বশুরের বিরুদ্ধে

সাথক্ষীরা জেলার কলারোয়ায় বাকশাহ গ্রামে যৌতুকের টাকা না পেয়ে দিনের পর দিন পুত্রবধূ কে ধর্ষণ, অতঃপর হত্যা করেছে শ্বশুর, এমনটাই জানিয়েছেন নিহত সুমির পরিবার ও এলাকাবাসী।
ঘটনাটি ঘটেছে, ১লা ডিসেম্বর ২০২৫ কলারোয়া উপজেলায় বাকশাহ গ্রামে জাফফার নিকারির বাড়িতে। স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে খবর পেয়ে রাত ২ টার পর জাফফারের বাড়ি থেকে নিহত সুমির লাশ উদ্ধার করে কলারোয়া থানার পুলিশ। পরে লাশ ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। তবে অভিযুক্ত শশুর শাশুড়ি কে গ্রেপ্তার করেনি থানার পুলিশ। এই ঘটনায় ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, নিহত পুত্রবধূ সুমির বয়স ১৮ বছর। ২৭/৬/২৫ ইং তারিখে তালা থানার মাগুরা ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের আনিছুর রহমানের কন্যা সুমি খাতুনের সাথে বিয়ে হয়, কলারোয়া উপজেলায় কেড়াঁগাছি ইউনিয়নে বাকশাহ গ্রামের আঃ জাফফারের পুত্র আঃ মতিন রনির সাথে।
পুত্রবধূ সুমির উপর কুনজর পড়ে শশুর জাফফারের। মানসিক বেকারগ্রস্থ ও অবৈধ লালশা তার সারাক্ষণ তাড়া করে। যৌন ক্ষুধায় পশুত্বও পরাজিত করে রাক্ষুসে পরিণত হয়ে নিজের পুত্রবধূকে কুপ্রস্তাব দেয়। পুত্রবধূর সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করত কিন্তু তাতে রাজি হয়নি পুত্রবধূ সুমি। দিনের পর দিন বাড়ছিল উত্যক্ত করার মাত্রা। যৌন মিলনে ব্যর্থ হয়ে যৌতুকের টাকার দাবিতে শুরু হয় অত্যাচার ও অমানসিক নির্যাতন। বাবার বাড়ি থেকে মটরসাইকেল ও যৌতুকের টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দিত শ্বশুর। পুত্রবধূ সুমিকে অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়, একপর্যায়ে খাবারের সাথে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে সুমিকে ধর্ষণ করত।
তবে এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানায়, শশুর শাশুড়ি মিলে তাকে হত্যা করে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে। সুমির পরিবার কে মামলা না করতে ৫ লক্ষ টাকা প্রস্তাব দিয়েছে নিহত সুমির শশুর। নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা মিশনে নেমেছে জাফফার। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তাদের বিপক্ষে না যায় দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে থানায়।
বাকশাহ গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, সুমি আত্মহত্যা করেছে একথা কাউকে জানাইনি। থানায় ফোন না দিয়ে সুমির পিতা মাতাকে জানিয়েছে। আমি জানতে পেরে তাদের বাড়িতে যেয়ে দরজা খোলা অবস্থায় দেখি। দরজা ভাঙার কোনো চিহ্ন নেই।সুমির ঘরে প্রবেশ করে তাকে আড়ায় ঝূলন্ত অবস্থায় দেখি। তার পা মেঝেতে ভাঁজ করা অবস্থায় দেখা যায়। বিছানা কাপড় এলোমেলো ছিলোনা, স্বাভাবিক ছিলো। ঘরের আড়ায় যেভাবে ওড়না দিয়ে বাঁধা সেটা সুমির পক্ষে সম্ভব নয়। সুমি আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এবিষয়ে রনির সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার স্ত্রীর সাথে কোনোদিন কথা কাটাকাটি পর্যন্ত হয়নি যে, সে আত্মহত্যা করবে। তার স্ত্রীর স্বভাবচরিত্র ভালো এবং যৌতুকের কোনো দাবি দাবা ছিলোনা বলে রনি জানায়। তবে তার স্ত্রীর অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক বিষয়টি তিনি সঠিক জানেনা। পারিবারিক ভাবে একে অপরের পছন্দ করে বিয়ে হয়েছে বলে জানায়।
নিহত সুমির পরিবার অভিযোগ করে বলেন, যৌতুকের টাকা মটরসাইকেলের দাবিতে তাঁর মেয়েকে শ্বশুর জাফ্ফার বিশ্বাস ও শাশুড়ি মুসলিমা বেগম নিয়মিত শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। প্রায় এক মাস আগে মারধর করে মেয়েকে বাবার বাড়িতে পাঠানো হয় এবং বলা হয়, মটরসাইকেল না দিলে এ বাড়িতে থাকতে পারবে না। পরে অনেক অনুরোধ ও সমঝোতার মাধ্যমে মেয়েকে আবার শ্বশুরবাড়িতে পাঠানো হয়।
সুমি খাতুনের বাবার দাবি, যৌতুকের টাকা , মটরসাইকেল জন্য শ্বশুর-শাশুড়ি তার মেয়েকে প্রায়ই নির্যাতন করত। খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করা হতো। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখে বলছে আত্মহত্যা করেছে। তিনি দোষীদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং ন্যায়বিচার পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সুমি বিষয়টি তার স্বামীকে জানাতে চাওয়ায় শ্বশুর-শাশুড়ি ঘটনা টের পেয়ে তাকে নির্মমভাবে মারধর করে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখে বলে তিনি দাবি করেন এলাকাবাসী। দোষীদের গ্রেপ্তারসহ আইনানুগ শাস্তির দাবি করেছেন।
ভিওডি বাংলা/ আবদুল্লাহ আল মামুন/ আ







