• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

মাধ্যমিকের ২৮ ভাগ পাঠ্যবই এখনও ছাপাই হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক    ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৫ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

মাধ্যমিক পর্যায়ের ২৮ শতাংশ পাঠ্যবই এখনও ছাপানো শেষ হয়নি। এছাড়া ছাপানো বইয়ের মধ্যে ৫০ শতাংশ এখনও উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছায়নি। ফলে নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা সব বই পাচ্ছে না; পূর্ণাঙ্গ সেট পেতে মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

মুদ্রণ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) গাফিলতি এবং সক্ষমতার অতিরিক্ত কাজ জালিয়াতির মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ায় এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘সোহাগী প্রিন্টার্স’ ৯ম শ্রেণির ১১ লাখ ৯২ হাজার বই ছাপানোর কাজ পেয়েছে। দরপত্রে ৬টি শিট মেশিন দেখানোর দাবি করলেও বাস্তবে তাদের রয়েছে মাত্র একটি শিট ও একটি গজ মেশিন। এমনকি প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া ঠিকানায় কোনো ছাপাখানার অস্তিত্বও পাওয়া যায়নি।

প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আশরাফুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘আমার আরেকটি ইউনিট আছে। আর একটি মেশিন পরিবর্তন করে গজ মেশিন নিচ্ছি।’

শিক্ষা গবেষকদের মতে, এ রকম বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান সক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি কাজ নিয়েছে। ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করেও কাজ পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দরপত্রের দায়িত্বে থাকা এনসিটিবির দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া এমন অনিয়ম সম্ভব নয় বলে তাঁরা মনে করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘দুর্নীতির শিকড় এত গভীরে যে, এখান থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। আমি মনে করি, যন্ত্রের পেছনের মানুষগুলো যদি সৎ না হয়, তবে কোনো প্রক্রিয়াই সঠিকভাবে কাজ করবে না।’

এ বছর মাধ্যমিকের ২১ কোটি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ শতাংশ বই ছাপানোর কাজ শেষ হলেও উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছেছে মাত্র অর্ধেক। ফলে বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন মুদ্রণ মালিকরা।

মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘প্রথমত, সক্ষমতার বাইরে কাজ দেওয়া হয়েছে এবং অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানও কাজ পেয়েছে। দ্বিতীয়ত, মাধ্যমিক স্তরে প্রাথমিকের চেয়ে কাগজ, ছাপা ও বাঁধাইয়ের কাজ অনেক বেশি। এসব সমন্বয় না করায় দেরি হচ্ছে।’

এদিকে এনসিটিবি দাবি করছে, অনিয়মের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সংস্থাটির সদস্য অধ্যাপক রিয়াদ চৌধুরী বলেন, ‘যে কয়টি প্রেসের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ পাব, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সংশ্লিষ্টরা আরও জানিয়েছেন, দেশে শতাধিক পেপার মিল থাকলেও এনসিটিবি মাত্র পাঁচটি মিলকে অনুমোদন দিয়েছে। কাগজের এই সিন্ডিকেট বাণিজ্যের কারণেও মাধ্যমিকে বই ছাপাতে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
৪৬তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ ও সময়সূচি প্রকাশ
৪৬তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ ও সময়সূচি প্রকাশ
স্কুলে ভর্তির লটারির ফল প্রকাশ: দেখবেন যেভাবে
স্কুলে ভর্তির লটারির ফল প্রকাশ: দেখবেন যেভাবে
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত