নাহিদ ইসলাম
আ’লীগের ভোটব্যাংক দখলে বিএনপি-জামায়াতে ‘প্রতিযোগিতা’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক দখলে নিতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে এক ধরনের 'প্রতিযোগিতা' চলছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকালে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রেে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন নাহিদ।
নাহিদ বলেন, 'এই ভোটগুলো নিশ্চিত করতে তারা কিছু লক্ষণ দেখাচ্ছে। তারা (আওয়ামী লীগের লোকজনকে) বলছে, মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে।' আওয়ামী লীগের নেতাদের বিএনপি ও অন্যান্য দলে 'অনুপ্রবেশ' প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেন তিনি।
নিজের বক্তব্যের পক্ষে কুমিল্লার দেবিদ্বারের একটি সাম্প্রতিক ঘটনার উদাহরণ দেন নাহিদ। এই আসন থেকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ নির্বাচন করবেন।
নাহিদ বলেন, 'দেবিদ্বারে গণমাধ্যম ও পুলিশ সুপারের সামনে বড় আয়োজন করে ২০০ জন আওয়ামী লীগের লোক বিএনপিতে যোগ দিয়েছে। এটা শুধু একটি উদাহরণ। আমরা এমন আরও অনেক ঘটনা দেখছি।'
ট্রুথ কমিশনের মাধ্যমে 'আওয়ামী লীগ প্রশ্ন' সমাধান না হওয়ায় দেশ ভুগছে বলে অভিযোগ তোলেন নাহিদ। বলেন, 'ফ্যাসিবাদী দলকে যারা সমর্থন করেছে আর যারা গণহত্যা বা সন্ত্রাসে জড়িত—এই দুই শ্রেণির মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য করতে হবে। ফ্যাসিবাদী দলকে সমর্থন করা নৈতিক অপরাধ, তারা ক্ষমা চাইলে সমাজে পুনর্বাসিত হতে পারে। কিন্তু যারা গণহত্যায় জড়িত, তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।'
এর আগে একজন দর্শক প্যানেলের কাছে জানতে চান, 'আওয়ামী লীগের নেতারা একটি নির্দিষ্ট দলে যোগ দিচ্ছেন কি না এবং তা ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'
বিএনপির পক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগটিকে 'সাধারণীকরণ' বলে উড়িয়ে দেন। বলেন, 'আমাদের দলে এমন উদাহরণ আপনি খুঁজে পাবেন না। আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি লড়াই করেছি। আমরা এতটা দেউলিয়া অবস্থায় পৌঁছাইনি যে ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে কাজ করতে হবে।'
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদও অভিযোগটি নাকচ করে দেন। এমন ধারণার জন্য তিনি 'হলুদ সাংবাদিকতা'কে দায়ী করে তিনি বলেন, 'আমাদের দলে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এত রক্ত ও জীবন দেওয়ার পর ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে কাজ করার প্রশ্নই ওঠে না।' তবে নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ দেওয়া হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম জানান, এ ধরনের প্রতিবেদনের সত্যতা নিয়ে তর্ক করা অর্থহীন, কারণ বাংলাদেশি রাজনীতিতে 'অনুপ্রবেশের সংস্কৃতি' একটি বাস্তবতা।
তিনি বলেন, 'অতীতে আমরা দেখেছি, পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে কীভাবে ছাত্রলীগের নির্বাহী সদস্য হওয়া যেত।' তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঠেকাতে হলে কেবল ব্যক্তিকে নয়, বরং 'লুটপাটের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে' উপড়ে ফেলতে হবে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ/এমএম




