দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
নির্বাচনী ব্যয় না কমলে দুর্নীতি কমানো যাবে না

নির্বাচনী ব্যয় কমানো না গেলে নির্বাচন-পরবর্তী দুর্নীতি কমানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, নির্বাচনে যে অতিরিক্ত ব্যয় হয়, তা পরবর্তীতে জনগণের কাছ থেকেই আদায়ের চেষ্টা করা হয়। ফলে নির্বাচনী ব্যয় নিয়ন্ত্রণ না হলে দুর্নীতি কমানো কঠিন হয়ে পড়ে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার: অগ্রগতি পর্যালোচনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এ বৈঠকের আয়োজন করে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনী ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশন—উভয়েরই দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু দুই পক্ষই এ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ সংস্কারের কোনো কার্যকর প্রক্রিয়া না থাকায় নির্বাচন কমিশনের ওপর দায়িত্ব আরও বেড়েছে। কমিশন তার সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারবে কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
তিনি জানান, নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘রিফর্ম ট্র্যাকার’ নামে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে, যেখানে নির্বাচন, দুর্নীতি দমন, গণমাধ্যম, শ্রমসহ ১৮টি খাতে সংস্কার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নির্বাচনসংক্রান্ত প্রায় ৫০টি নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রস্তাবিত ৩১টি সংস্কারের মধ্যে মাত্র দুটি বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। এর একটি হলো জেন্ডার গ্যাপ কমানো এবং অন্যটি নির্বাচনের আগে ১৮ বছরে পা রাখা নাগরিকদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে নির্বাচনই বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের প্রধান স্তম্ভ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে মানুষের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে—নির্বাচন আদৌ হবে কি না, আর হলেও তার গুণগত মান কেমন হবে।
তিনি বলেন, কয়টি বুথ দখল হলে বা কত শতাংশ ভোট পড়লে একটি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে—এ ধরনের প্রশ্ন জনমনে রয়েছে। ‘গ্রহণযোগ্য’, ‘অংশগ্রহণমূলক’ ও ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ নির্বাচনের স্পষ্ট সংজ্ঞা না থাকলে ভবিষ্যতে নির্বাচন নিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব বিষয়ের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা সরকারের দেওয়া উচিত।
বৈঠকে সুজনের সম্পাদক ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিচারপতি এম এ মতিন, নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি প্রমুখ।
ভিওডি বাংলা/ এসএইচ/ আ


