মাটির সঙ্গে লেখা বিদায়

মাটির সঙ্গে লেখা বিদায়
মহাকালের কপালে আজ এক ফোঁটা নোনা জল—
সে জল সবার।
কেননা সময়ও জানে,
কিছু মানুষ সময়ের ভেতর জন্মায় না;
তারা সময়কে জন্ম দেয়।
বেগম জিয়া, তুমি ছিলে তেমন।
রাষ্ট্রের মানচিত্রে নয়,
মানুষের দীর্ঘশ্বাসে আঁকা শুধু তোমারই নাম।
যখন উচ্চারিত হতো তোমার নাম,
শব্দগুলো কেঁপে উঠত,
ভয়ে নয়—
শ্রদ্ধার ভারে।
বেগম জিয়া তুমি বলেছিলে-
এই দেশের মাটি ও মানুষ ছাড়া
আমার আর কোথাও জায়গা নেই।
সে কথা আজও বাতাসে ভাসে,
ধানক্ষেতের মাথায় মাথায়,
শহীদের কবরে কবরে,
বঞ্চিত মানুষের বুকের ভেতর
অদৃশ্য পতাকা হয়ে উড়ে।
দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।
তুমি ফিরবে না—
এই সত্যটা বুক ফুঁড়ে নামে,
তবু বিশ্বাস মানে তো কেবল দেখা নয়,
বিশ্বাস মানে অনুভব।
বেগম জিয়া,
তুমি অনুভব হয়ে আছো;
প্রতিটি প্রতিবাদের নিঃশ্বাসে।
একটি অধ্যায় নীরবে বন্ধ হলো,
কিন্তু ইতিহাস কি কখনো নীরব থাকে?
বরং তোমার পায়ের শব্দ জমিয়ে রাখে।
পাথরের স্মৃতিতে,
যেন আগামী প্রজন্ম প্রশ্ন করলে
সময় নিজেই উত্তর দিতে পারে,
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের পক্ষে হয়ে।
হে আল্লাহ-
আজ আমরা দাঁড়িয়ে আছি
অক্ষম দু’হাত তুলে—
ভুলত্রুটি মাফ করে দাও,
এই আত্মাকে দাও এমন শান্তি
যা কেবল সংগ্রামের পরেই আসে।
যেখানে কোনো বিচার নেই,
শুধু করুণা আর করুণা।
বাংলাদেশ আজ আরও একবার অনাথ হলো তোমার মৃত্যুতে।
কারণ অভিভাবক মানে,
যিনি হার মানেন না।
তুমি ভূখণ্ডের শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক।
এই ক্ষতি কোনো ভাষায় ধরা পড়ে না,
এ শোক কোনো কাগজে ধরে না।
তবু তুমি আছো—
রক্তে, বিশ্বাসে, অপেক্ষায়।
সময় পেরিয়ে, প্রজন্ম পেরিয়ে
এক কালজয়ী দায় হয়ে
আমাদের বিবেকের কাছে।
অনন্ত নক্ষত্রবীথির আলো হয়ে
তুমি জ্বলে থাকো মানুষের হৃদয়ে।
বিদায় নয়—
এ কেবল মাটির সঙ্গে
আরও গভীর করে লেখা এক প্রতিজ্ঞা।
ভিওডি বাংলা/ এম/এমপি



