• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

নিজ হাতে মাকে কবরে শায়িত করলেন তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক    ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৪ পি.এম.
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান-ছবি-ভিওডি বাংলা

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে রাজনীতি, পরিবার ও সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর শোক নেমেছে।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়া ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুতে সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া জানাজা উপলক্ষে বুধবার সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। 

বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে রাজধানীর জিয়া উদ্যানে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে খালেদা জিয়াকে দাফনের কার্যক্রম শুরু হয়। সবার আগে কবরে নামেন তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি নিজ হাতে মাকে কবরে শায়িত করেন। মায়ের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তারেক রহমান প্রথমে মাটি দেন, এরপর তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিএনপির শীর্ষ নেতারা কবরের মাটি দেন।  

এদিকে কিছুটা দূরে অবস্থান করেন তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান, আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানসহ পরিবারের নারী সদস্যরা। দোয়া শেষে একটি পাত্রে নেওয়া মাটিতে স্পর্শ করতে দেখা যায় তাদের।

এর আগে বিকেল ৩টার পর পূর্ণ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মুহাম্মদ আবদুল মালেক খালেদা জিয়ার জানাজা পড়ান। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পরিবারের সদস্যরা, বিএনপির শীর্ষ নেতারা, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এবং বিদেশি অতিথিরা। পুরো আয়োজন পরিচালনা করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানরাও নামাজে জানাজায় অংশ নেন। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও খালেদা জিয়ার জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।

জানাজার আয়োজন ও পরিচালনা করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি জানাজার আগে বেগম খালেদার দীর্ঘ জীবন নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। তারেক রহমানও পরিবারের ও দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন।

 তিনি বলেন, “আপনারা আমার মরহুমা মায়ের জন্য দোয়া করবেন। কারও কাছে আমার মায়ের কোনো ঋণ থাকলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, আমি তা পরিশোধ করবো। কেউ আমার মায়ের আচরণ বা কথায় কষ্ট পেয়েছে, তার পক্ষ থেকে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।”

জানাজার সময় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, বিজয় সরণি, খামারবাড়ি, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, শাহবাগ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় লাখো মানুষ উপস্থিত ছিলেন। যারা সেখানে উপস্থিত হতে পারেননি, তারা আশপাশের স্থানগুলোতে দাঁড়িয়ে শোক ও জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।

এর মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী নেতা বেগম খালেদা জিয়ার জীবনযাত্রা ও অবদানকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হলো। তার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে ছেলে তারেক রহমান নিজ হাতে মাকে শায়িত করার দৃশ্য যেন দেশের মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাদের জন্য একটি গভীর অনুভূতির মুহূর্ত হয়ে থেকে যায়।

ভিওডি বাংলা/জা

 

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জিয়া উদ্যানে খালেদা জিয়ার মরদেহ
জিয়া উদ্যানে খালেদা জিয়ার মরদেহ
খালেদা জিয়া রেখে গেছেন ত্যাগ ও সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস: তারেক রহমান
খালেদা জিয়া রেখে গেছেন ত্যাগ ও সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস: তারেক রহমান
মায়ের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইলেন তারেক রহমান
খালেদা জিয়ার জানাজা মায়ের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইলেন তারেক রহমান