এজেন্ডা কিংবা নস্যাৎ পরিকল্পনার মধ্যে দিয়ে সরকার চলছে কিনা প্রশ্ন রিজভীর


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার এখন ক্ষমতায়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখন ক্ষমতায়। কিন্তু যাদের আত্মদান এতো গুম হয়ে যাওয়া ট্রাজেডির চূড়ান্ত ঘটনা, বিগত ১৫,১৬ বছর ধরে নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে যে কান্না সেই কান্নার রোল এখনো থামেনি। এদের আহাজারি এখনো আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হয়। ইতিমধ্যে পলাতক হয়ে গেলেন ফ্যাসিবাদী সরকার, রাষ্ট্রপরিচালনায় এখন অন্তর্বর্তী সরকার। কারণ গণতন্ত্র ধ্বংস ভোটাধিকারহরণ, কথা বলা যায় না; যা আমাদের প্রতিনিয়ত তাড়া করে বেড়িয়েছে। চিরদিন ক্ষমতা ধরে রাখতে শেখ হাসিনা যেভাবে রক্তাক্ত কর্মসূচি পালন করে গেছেন সেটা প্রতিহত করে ১৫ বছর ধরে সমমনা দল গুলো এবং বিএনপির নেতৃত্বে এতো যে আত্মত্যাগ? সবশেষে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার সম্মিলিত আন্দোলনে আমরা সাফল্যমন্ডিত হই শেখ হাসিনাকে তাড়াতে। এগুলো কি বৃথা?
বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আয়োজিত দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছেন বিএনপি স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু।
তিনি বলেন, আজকের অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আছে কিন্তু আমাদের দলের ৬০ লক্ষ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা। দ্রুত দায়িত্ব পালন করে হোক কিংবা কোন আইনজীবীকে দিয়ে হলেও তো মামলা গুলো প্রত্যাহার করা যেত; আপনি তো ৮ মাস ধরে ক্ষমতায় আসেন। ৬০ লক্ষ মামলার ফলশ্রুতিতে আজকে আপনারা ক্ষমতায়। অথচ এরজন্য তো আপনারা কিছুই করেননি। কেন আজো আমাদেরকে আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরে বেড়াতে হবে?
রিজভী বলেন, সরকার একেবারে কাজ করছে না আমি সেটা বলবো না হয়তো কিছু কাজ করছেন। কিন্তু যে ভোটাধিকারের জন্য ১৫,১৬ বছরের আন্দোলন; সেই ভোটাধিকার কেন বিলম্ব হচ্ছে। কেন এতো কথা হচ্ছে; কেন নির্বাচন ও ভোটাধিকারের বিকল্প হিসেবে সংস্কারকে দাড় করাচ্ছেন। সংস্কার কেন ভোটাধিকার গণতন্ত্র ও নির্বাচনের বিকল্প হবে। আমরা ভোট নির্বাচনের কথা বললে সরকার বিকল্প দাড় করাচ্ছেন। অথচ গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে নির্বাচন ও ন্যায়বিচার। প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা তো বিএনপি বার বার বলছে। আপনি বিভিন্ন পরিষদ গঠন করেছেন সেগুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে বৈঠক চলছে। কিন্তু ডিসেম্বর-জুনের মধ্যে কেন ঝুলছে বাংলাদেশের নির্বাচনের ওয়াদা। সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা ডিসেম্বর আর জানুয়ারির মধ্যে দোল খাচ্ছে; অন্তর্বর্তী সরকারকে এর জবাব দেওয়া দরকার। তারা যে একে বারে সোনায় সোহাগা হয়ে গেছে তা নয়; মানুষের বাড়িতে বাড়িতে ওয়াসার পানির বদলে সেখানে দুধ বয়ে যাচ্ছে এমন তো নয়। অনেক জিনিস অনেক দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। দুর্নীতি যে একেবারে নাই তা নয়, ফ্যাসিবাদের দোসররা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে আছেন। কই এদের ব্যাপারে এতো বলার পরও তো কোনো পদক্ষে নেননি।
তিনি বলেন, জনপ্রশাসনের সচিব বলছেন- ‘তার ৫ কোটি টাকা হলেই আমার চলবে’ তারপরও তিনি বহাল তবিয়তে ঠিকে থাকেন। আর জানতে পারি বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত বিএনপি পরিবারের কেউ থাকে তাহলে তাকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয় না। যারা আছেন তাদের কে সরিয়ে দেওয়া হয়।
কোনো একটা এজেন্ডা কিংবা নস্যাৎ পরিকল্পনার মধ্যে দিয়ে এই সরকার চলছে কিনা প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে নির্বাচন, যা ধোয়াশা তৈরি করছে। তাই জনগণের সঙ্গে চলা কলা করলে এটা কিন্তু ভালো প্রতিক্রিয়া হয় না। দেশ কি খুব ভালো চলছে? আজকে পলিটেকনিক্যাল কলেজের ছেলেরা রেলপথ অবরোধ করছে, যেখানে রেলপথ নাই সেখানে সড়ক অবরোধ। যে কোনো প্রতিষ্ঠানের ছেলেরা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে স্ট্রাইক করে অথচ এখন তারা রেলপথ অবরোধ ঘোষণা দেয়। যা এর আগে আমরা শুনিনি। সরকার যদি কার্যকর সরকার হয় তাহলে জনগণকে দুর্ভোগ পোহোতে হচ্ছে কেন? সরকার এবাবে পরিচালিত হয় না। মানুষের প্রত্যাশা বেশি এতো ভয়ঙ্কর দৈত্যস্বরুপ রাক্ষসী ফ্যাসিবাদের পতনের পর দায়িত্বশীল সরকার সব জায়গায় থাকে। যে সরকারের ডিসি বলেন এখানে এই কাজ করা যাবে এই কাজ করা যাবে না কারণ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্ররা বলে গেছেন; তাহলে এটা তো কার্যকর সরকার হতে পারে না। সরকার জবাবদিহি হবে যেহেতু সংসদ নাই জনগণের সেন্টিমেন্টের কাছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের অবদানকে স্বীকার করি, এটা যদি এরকম হয় ছাত্রদের কথা প্রশসান চলবে; তাহলে এটাকে বলবে নৈরাজ্য। যে দেশে নৈরাজ্য চলে সেই দেশে এই ধরণের ঘটনা হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রশাসনের যোগাযোগ হবে সেক্ষেত্রে ছাত্রনেতাদের সঙ্গেু কথা বলা যাবে কিন্তু তারা যদি ডিক্টেট করে তাহলে সেটা নৈরাজ্য, এটা তো হওয়ার কথা নয়। আমি তো শুনিছি প্রতিটি মিনিস্টিতে ছাত্রদের নিয়ে কমিটি আছে। তাহলে ১৫, ১৫ বছরের আন্দোলনে আমরা চেয়েছি ভোটাধিকার গণতন্ত্র নিরাপত্তা বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করা। আদালয়ে গিয়ে ন্যায় বিচার পাবো এটাই হচ্ছে একটা গণতান্ত্রিক সমাজ।
সাবেক ছাত্রনেতা ও বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী সম্পর্কে রিজভী বলেন, ‘আমরা ইলিয়াস আলীর গুম নিয়ে অনুষ্ঠান করছি এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমরা েআনন্দের দিনে হাসছি আনন্দ করছি অনেক কিছুই করছি।কিন্তু আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্টজনরা যে আমাদের মধ্যে নেই আমরা দিন তাদের কথা মনে করি। আমরা যখন ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ করি তখন থেকেই আমাদের ধ্যান জ্ঞান সব এই রাজনীতি ঘিরে।কোথায় পরিবার কোথায় বাবা-মা, আমাদের সবকিছু যেন এই দল ও রাজনীতি। ছাত্র রাজনীতির সুবাদে আমাদের পরিচয় তারপর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নির্বাচিত সভাপতি হয়েছিলাম আমি এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছিল এম ইলিয়াস আলী। অনেকদিক থেকে কেন জানি তার সাথে মিল হতো। যদিও সে কিছুটা সেন্টিমেন্টাল যা বলতো অনেকসময় এগ্রেসিভলি বলতো। সেই তুলনায় আমি একটু শান্ত স্বভাবের। তবে ইলিয়াস আলীর হৃদয়ছিল অত্যন্ত কোমল। সে না কে না বুঝত এর পিছনে কোনো কলাকৌশল থাকতে পারে কিনা সে বুঝত না।সহজ সরল পথে সে চলাফেরা করতো। দলের প্রতি তার যে আনুগত্য, দলের নেতৃত্বের প্রতি ছিল তা অবিচল আস্থা যা আমাদের অনেকের মধ্যে দেখি না।’
তিনি বলেন, ম্যাডাম খালেদা জিয়ার নির্দেশনায় ইলিয়াস আলীকে খুজে পেতে দল সর্বাত্মক আন্দোলন প্রচেষ্টা চালিয়েছে। একেরপর এক হরতাল ছিল। ইলিয়াস আলী আমাদের কাছে নেই, চৌধুরী আলম আগেই চলে গেছেন।
তিনি বলেন, ইলিয়াস আলী গুম হওয়ার পর আমরা পত্র পত্রিকায় এবং নানাভাবে জানতে পারি এর সঙ্গে সরকার জড়িতছিল।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে রাখেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভূইয়া, তাহসিনা রুশদি লুনা,যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।
ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন দেওয়ার কোনও যৌক্তিকতা নেই: খোকন
নরসিংদী প্রতিনিধি
অনির্বাচিত ব্যক্তিদের কাছে দেশ ও জাতি নিরাপদ নয় …

জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের জন্য উপহার নিয়ে হাসপাতালে ইশরাক হোসেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন ইশরাক …

এপ্রিল ফুল নয়, ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে হবে : ১২ দলীয় জোট
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের সব গণতান্ত্রিক দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়েছে। দেশের …
