এনডিএম’র বাজেট প্রস্তাবনা


নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী অর্থবছরন ২৫-২৬ সালের বাজেট প্রস্তাবনা দিয়েছে এনডিএম। দলটির চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ লিখিত বক্তব্যে যা বলেছেন; ভিওডি বাংলা’র পাঠকদের তা তুলে ধরা হলো। বৃহস্পতিবার (২৯মে) এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির চেয়ারম্যান তাদের বাজেট প্রস্তাবনা দেন।
এনডিএম এর বাজেট প্রস্তাবনায় আপনাদের স্বাগতম। আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন, আগামী ২রা জুন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭.৯০ লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করতে যাচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটে শীর্ষ ১০টি মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (এডিপি) বরাদ্দ থেকে ১৩ শতাংশ কম বরাদ্দ রাখা হচ্ছে যা সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির বহিঃপ্রকাশ। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসাবে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম আগামী অর্থবছরের বাজেটের জন্য মৌলিক কিছু প্রস্তাব আপনাদের মাধ্যমে জাতির সামনে আজ উপস্থাপন করছে। আমরা আশা রাখব, চূড়ান্ত বাজেট অধ্যাদেশের আগে সরকার আমাদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় নিবে। আজ আমরা সংক্ষিপ্ত বাজেট প্রস্তাবনা উপস্থাপন করছি। আর্থিক খাত এবং গণমুখী বাজেট সংক্রান্ত বিস্তারিত প্রস্তাবনা আগামী সপ্তাহে আমরা সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে তুলে ধরবো।
বিগত দিনগুলোতে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণের ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার লক্ষ্যে মানুষকে উন্নয়নের গালগপ্পো শুনিয়ে এসেছে। এজন্য তাঁরা জিডিপি প্রবৃদ্ধির দিকে বেশি মনোযোগী ছিল। বর্তমান সরকারের উচিৎ জিডিপি প্রবৃদ্ধির দিকে বেশি দৃষ্টি না দিয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রতি নজড় দেয়া। এর জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখা। বাজেটের মূল কৌশলে এই দুটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে আমরা আশা করছি।
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি এবং সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছতা সাধনের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভব নয়। এই বাজেটে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিৎ মূল্যস্ফীতি হ্রাস। বাজার ব্যবস্থাপনা এবং বাজার মনিটরিং, সরবরাহ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ইত্যাদি বিষয়ে সরকারকে নজড় দিতে হবে।
সাধারণ জনগণ করের সিংহভাগ প্রদান করলেও প্রাপ্তি সামান্য। বিগত দিনগুলোতে গণহত্যার হুকুমদাতা হাসিনা উচ্চ প্রবৃদ্ধি দাবি করলেও অন্যান্য আর্থ-সামাজিক সূচকের সাথে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিলো না। আমরা আগামী অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানোর প্রস্তাব করছি। বিশেষ করে জনগণের পুষ্টি গ্রহণের হার বৃদ্ধি, শিশুখাদ্যের মূল্য হ্রাস, প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধি, নির্দিষ্ট পর্যায়ে বেকারভাতা চালু, প্রবীণ এবং শারীরিকভাবে অক্ষম দরিদ্র নাগরিকদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু, গ্রামীণ পর্যায়ে ন্যাশনাল সার্ভিসের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, দলিত এবং ভাসমান জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য বিশেষ বরাদ্দ, দুরারোগ্য অসুখে আক্রান্ত অসচ্ছল ব্যক্তিদের জন্য এককালীন অনুদান ইত্যাদি আমাদের প্রস্তাবের অন্তর্ভুক্ত।
সঞ্চয় থেকেই দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। অথচ পরিসংখ্যান বলছে দেশের মানুষের সঞ্চয় কমছে এবং ভোগ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত কয়েকটি অর্থবছরেই ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগের গতি হ্রাস পেয়েছে। ব্যক্তি এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য আগামী অর্থবছরে সরকারকে সুষ্পষ্ট কর্মকৌশল রাখতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনে দেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে আগামী বাজেটে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিতে হবে এবং আমরা আশা করব সরকার তাঁর বাজেট প্রস্তাবনায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করবে।
রাজস্ব আহরণের যে গতি আমরা দেখতে পাচ্ছি সেটা চলমান থাকলে এবছরের শেষে ঘাটতি থাকবে প্রায় ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকা। ৩২% বার্ষিক রাজস্ব প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে রাজস্ব আহরণে আমাদের গতি বাড়াতে হবে। কর বহুমুখীকরণ এবং জনগণকে কর প্রদানে আগ্রহী করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। একইসাথে চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারভিত্তিতে পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
আগামী অর্থবছরে আমরা গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি না করার প্রস্তাব করছি কারণ তা সরাসরি খাদ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করবে। রাজস্ব নীতির ক্ষেত্রে কর হারকে এমনভাবে পুনবিন্যাস করতে হবে যাতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় কারণ আমরা শীঘ্রই এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটাতে যাচ্ছি। জাতীয় অর্থনীতির ৭৬১১টি ট্যারিফ লাইনের মধ্যে অন্তত দুই শতাধিক ট্যারিফ লাইনকে ঢেলে সাজাতে হবে। বর্তমানে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সাথে আমাদের প্রতিশ্রুত ট্যারিফ লাইন ৯৫৫টি যার মধ্যে ৭৬৩টি কৃষি পণ্য এবং ১৯২টি অকৃষজ পণ্য। আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে, উচ্চ আবগারী শুল্ক , রেগুলেটরি এবং সাপ্লিমেন্টারি ডিউটির কারণে আমরা ভবিষ্যতে “ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট” স্বাক্ষর করার ক্ষেত্রে বাঁধার মুখে পড়ব যা এলডিএসি থেকে উত্তরণের পর আমাদের জন্য স্বাক্ষর করা জরুরি। সুতরাং সরকারকে আগামী বাজেট থেকেই কর বহুমুখীকরণ নীতির পথে হাঁটতে হবে এবং উচ্চ আর ডি এবং এস ডির প্রতি নির্ভরশীলতা কমাতে হবে।
কর বহুমুখীকরণের ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রদানকারীর সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং সমগ্র ভ্যাট ব্যবস্থাপনা এক ছাদের নিচে নিয়ে আসতে হবে। বর্তমানে নিবন্ধকৃত ভ্যাট প্রদানকারীর সংখ্যা মাত্র ৫ লাখ যা বাস্তবে আরও বেশী হবার কথা। তবে আমরা বর্তমানে ১৫% ভ্যাটের হার কমিয়ে ১০% করার প্রস্তাব করছি। বর্তমান কর সংগ্রহ এবং ব্যবস্থাপনা থেকে গত বছরে ৭০ শতাংশ রপ্তানিকারক বাদ পড়েছে যাদের আমাদের কর সংগ্রহের মূলধারায় নিয়ে আসতে হবে। কোন রপ্তানিকারক যার ব্যাংক গ্যারান্টি রয়েছে সে শুল্ক ছাড়াই কাঁচামাল আমদানি করতে পারবে বলে যে প্রস্তাব এসেছে আমরা সরকারকে সেটা বিবেচনায় নেবার অনুরোধ করছি কারণ এটা ব্যবসার খরচ এবং সময় বাঁচাবে এবং সরকার পরবর্তীতে আরও বেশি রাজস্ব পাবে।
নতুন আয়কর আইন-২০২৩ অনুযায়ী উৎসে করকর্তনের মাসভিত্তিক যে প্রমাণ দাখিলের কথা বলা হয়েছে তা সাধারণ করদাতাদের জন্য যথেষ্ট হয়রানিমূলক। আইনে প্রদত্ত “কোম্পানি” সংজ্ঞাও যথেষ্ট জটিল। আগামী অর্থবছরের বাজেটে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন করে কর ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিকায়ন এবং ঝামেলামুক্ত করতে আমরা সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে আমরা বিগত বছরগুলোতে ব্যপক লুটপাট এবং দুর্নীতি দেখেছি। আগামী বাজেটে সরকারের অগ্রাধিকার হওয়া উচিৎ এইখাতের দায়-দেনা শোধ করা। আমদানি নির্ভর এলএনজি থেকে বেরিয়ে এসে দেশের উৎস থেকে গ্যাস সংগ্রহ করার জন্য বাপেক্স এবং পেট্রোবাংলাকে বিশেষ বরাদ্দ দেবার জন্য আমরা আহবান জানাচ্ছি। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের জন্য যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করছি। জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদনের ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক প্রণোদনা প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করছি। সোলার পাওয়ার যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব রাখছি। “নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার সহায়তা তহবিল” নামক বিশেষ ফান্ড আগামী বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করছি।
আগামী অর্থবছরের জন্য ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের জন্য বার্ষিক টার্ণওভার ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে তা ভ্যাটের আওতা বহির্ভূত রাখার প্রস্তাব করছি। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের জন্য ব্যাংক ঋণ সহজপ্রাপ্তিতা নিশ্চিত করতে বাজেটে কর্মকৌশল অন্তর্ভূক্ত করার প্রস্তাব করছি। স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির সকল কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে রেগুলেটরি ডিউটি এবং সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি প্রত্যাহারের প্রস্তাব রাখছি। কার্বোনেটেড কোমল পানীয় এবং এনার্জি ড্রিংক প্রস্তুতের ক্ষেত্রে এক্সাইজ ডিউটি বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি। সিগারেটের উপর ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি। তামাক পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের উপর কর্পোরেট ট্যাক্স হার ৪৫% থেকে বাড়িয়ে ৫০% করার প্রস্তাব রাখছি।
আমাদের জিডিপি অনুপাতে স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় যথেষ্ট অপ্রতুল। আমরা প্রস্তাব করছি, নির্দিষ্ট এইচ এস কোড সৃষ্টির মাধ্যমে চিকিৎসা এবং ঔষধ উৎপাদন সংক্রান্ত কাঁচামাল এবং যন্ত্রপাতি আমদানি জটিলতা নিরসন করতে হবে। এক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল কাঁচামাল আমদানি রেয়াতের তালিকা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোর শিক্ষা এবং গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বৃদ্ধি এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ দিতে হবে। ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং নার্সদের ভাতা বৃদ্ধি করতে হবে। কিডনি এবং ক্যান্সার চিকিৎসায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় মানসম্মপন্ন এবং সুল্ভ চিকিৎসা নিশ্চিতে বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে। এই বাজেট থেকেই জাতীয় পর্যায়ে “হেলথ কার্ড” চালুর সুপারিশ আমরা রাখছি। জুলাই আহত যোদ্ধাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
টাকার অঙ্কে শিক্ষাখাতে বাজেট বাড়লেও জিডিপি অনুপাতে তা বাড়ে নাই। শিক্ষাখাতে আমরা মোট বাজেটের অন্তত ১৫ শতাংশ বরাদ্দ চাই। শিক্ষা মন্ত্রনালয় এবং প্রাথমিক এবং গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মধ্যে যৌক্তিকভাবে এবং প্রয়োজনীয়তার নিরিখে এই বাজেট বরাদ্দ করতে হবে। এরমধ্যে অগ্রাধিকার থাকতে হবে শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় এবং মর্যাদাপূর্ণ করে তুলতে শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি, প্রাথমিক এবং এবতেদায়ী শিক্ষকদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ, কারিগরি শিক্ষার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, সরকারি পর্যায়ে সহ-শিক্ষা এবং সৃজনশীল শিক্ষাকার্যক্রমে বরাদ্দ বৃদ্ধি, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য উপজেলা পর্যায়ে আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণাগার এবং পাঠাগার চালু, অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত মিড-ডে মিল চালু, সরকারি খরচে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত বিশেষ টয়লেট নির্মাণ, মেডিকেল এবং প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান সমস্যাগুলো দূর করা, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটের সমাধান, উচ্চ শিক্ষায় গবেষণার ক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধি, উপবৃত্তির পরিমাণ ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা, ক্রীড়া শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা ইত্যাদি। ৭ কলেজ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য এই কলেজগুলোকে নিয়ে “জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়” চালু করতে সরকারের প্রতি আমরা আহবান জানাচ্ছি। দেশব্যাপী বিজ্ঞান মেলা, সাংষ্কৃতিক সপ্তাহ, গণিত, ফিজিক্স, ল্যাঙ্গুয়েজ অলিম্পিয়াড আয়োজন করা, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য রোবটিক্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা নিয়ে বাজেটে নজড় দিতে আমরা সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
রাষ্ট্রের সার্বিক নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার। আমরা সামাজিক নিরাপত্তার পাশাপাশি মানুষের জান-মালের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে চাই। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এইখাতে বাজেটে আমরা বিশেষ বরাদ্দ চাই। আমাদের প্রতিরক্ষা খাতে যে বাজেট বরাদ্দ করা হয় তার প্রায় ৯৭ শতাংশ ব্যয় হয় পরিচালনা খাতে। আমরা এইখাতের বাজেট বরাদ্দের সুষম ব্যবহার করে আমাদের সামরিক বাহিনীকে সক্ষমতা বৃদ্ধি দেখতে চাই। এছাড়া অগ্নি নির্বাপন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স বাহিনীর জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ চাই। ব্যাটেলিয়ন আনসার বাহিনীর বাহিরে যারা আনসার সদস্য হিসাবে কাজ করে তাঁদেরকে জননিরাপত্তায় আরও বেশি কাজে লাগানোর জন্য তাঁদের ভাতা বৃদ্ধি এবং আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চাই। পুলিশ সার্ভিস কমিশন গঠনের মাধ্যমে তাঁদের সুপারিশের ভিত্তিতে পুলিশ বাহিনীর জন্য বরাদ্দ দেখতে চাই।
বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রায় ২০ লক্ষের অধিক নতুন কাজ প্রত্যাশীরা প্রবেশ করে। । বিপুল সংখ্যক কর্মক্ষম এই জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে অর্থনীতির মূলধারায় নিয়ে আসতে বেসরকারি পর্যায়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। আমরা এই বিষয়ে বাজেটে স্পষ্ট পরিকল্পনা চাই। আমরা চাই বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আওয়ামী লোক দেখানো সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করবে ।
আমরা প্রস্তাব রাখছি, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ঘাটতি বাজেট যেন মোট দেশজ উৎপাদনের ৫ শতাংশের নিচে রাখা হয়। কর্পোরেট গর্ভনেন্স এর সবগুলো সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান অত্যন্ত দূর্বল। এবিষয়ে বাজেটে বিশেষ নজর দেবার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। সার, বীজ এবং কৃষি উপকরণের দাম যাতে বৃদ্ধি না পায় সে ব্যাপারে বাজেটে নজর রাখতে হবে। সরকারি পরিচালন ব্যয় কমিয়ে গণমুখী বাজেট করতে হবে। আমরা চাই, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে এই সরকার এমন এক বাজেট প্রস্তাব করবে যা পরবর্তী নির্বাচিত সরকার মেয়াদের বাকি অংশে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে।
আমরা আপনাদের মাধ্যমে প্রশ্ন রাখতে চাই সরকারের সমর্থনপুষ্ট হঠাৎ গজিয়ে অথা একটি রাজনৈতিক সংগঠন কীভাবে সরকারের মুখপাত্র হয়? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার কিছু পছন্দের ব্যক্তিদের ডেকে “সর্বদলীয় রাজনৈতিক বৈঠক “বলে গণমাধ্যমে প্রচার করেছে। এই সরকার নির্বাচন প্রলম্ভিত করতে এখন মন খারাপের নাটক মঞ্চস্থ করেছে। আমরা এর অবসান চাই। আমরা চাই রাজনৈতিক মাঠের মতন অর্থনীতির মাঠেও বাজেটের জন্য জনগণ না হয়ে, জনগণের জন্য যেনো বাজেট হয়।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী মারা গেছেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের …

খালেদা জিয়া ভালো আছেন, সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির …

ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন দেওয়ার কোনও যৌক্তিকতা নেই: খোকন
নরসিংদী প্রতিনিধি
অনির্বাচিত ব্যক্তিদের কাছে দেশ ও জাতি নিরাপদ নয় …
