বাল্য বিয়ের ফলে মানসিক বিপর্যস্ত মা হত্যা করেন সন্তানকে


পাবনা প্রতিনিধি
অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা শ্রাবন্তী বিশ্বাসের মাত্র তের বছর বয়সে মধ্যবয়সী দিনমজুর কমল মন্ডলের সাথে বিয়ে হয়। কমল মন্ডলের প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর বিয়ে হয় এই দম্পতির মধ্যে। প্রথম পক্ষের দুই ছেলে সন্তান, সংসারে অভাব, স্বামীর সাথে মাঝে মধ্যে মনোমালিন্যেসহ নানা কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন শ্রাবন্তী।
বছরখানেক পার হওয়ার পর শ্রাবন্তীর গর্ভে জন্ম নেয় একটি কন্যা সন্তান। নাম রাখেন সোহাগী। কন্যা সন্তান জন্মের পর কমল মন্ডল খুশি হলেও প্রসব পরবর্তী সময়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন শ্রাবন্তী বিশ্বাস। সংসারের কাজ, সন্তান সামলানো সবকিছুই অসহ্য লাগতে থাকে।
একপর্যায়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শ্রাবন্তী বিশ্বাস তার চার মাস ৯ দিন বয়সী একমাত্র মেয়েকে ঘুমন্ত অবস্থায় নদীতে ফেলে হত্যা করেন। হত্যার পর নিজেই স্বজনসহ অন্যদের সাথে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের পর কান্নাকাটি করে সবাইকে বলেন, ঘুমন্ত শিশুটিকে কে বা কারা তুলে নিয়ে হত্যা করেছে তা জানেন না তিনি।
ছোট্ট শিশুর মৃত্যু নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অবশেষে সেই রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে শিশু সোহাগী হত্যার এমনই এক রোমহষর্ক তথ্য। নিজ সন্তানকে হত্যার অভিযোগে আটক করা হয়েছে মা শ্রাবন্তী বিশ্বাসকে। মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হয় আদালতে। সেখানে ১৬৪ ধারায় নিজ সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (০২ জুন) সকাল ১১ টায় পাবনার চাটমোহর থানা চত্ত্বরে প্রেস ব্রিফিংয়ে মাধ্যমে উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের জালেশ্বর মন্ডলপাড়া গ্রামের শিশু সোহাগী মন্ডল হত্যাকান্ডের বিস্তারিত তুলে ধরে পুলিশ। এর আগে রোববার (১ জুন) অভিযুক্ত মা শ্রাবন্তী বিশ্বাসকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আক্তার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আওলাদ হোসেনসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা।
শনিবার (৩১ মে) সকাল আটটায় বাড়ির অদূরে বড়াল নদ থেকে সোহাগী মন্ডল নামের ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর ওই শিশুর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-১৭। শিশুটি ওই গ্রামের দিনমজুর কমল মন্ডলের মেয়ে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত শনিবার (৩১ মে) সকাল ৮টার দিকে ৫ মাস বয়সী কন্যা শিশু সোহাগী কে নিজ বাড়ির বারান্দার চৌকিতে শুইয়ে রেখে পাশের বাড়িতে গরুর খড় আনতে যান মা শ্রাবন্তী বিশ্বাস। পরে ফিরে এসে তার শিশু কন্যাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরবর্তীতে পাশের বড়াল নদীতে উপুড় হওয়া অবস্থায় ওই শিশুর মরদেহের সন্ধান মেলে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো বলা হয়, মা শ্রাবন্তী বিশ্বাস নিজেই মেয়েকে হত্যা করেছেন। সাংসারিক অশান্তি ও শিশু মেয়ে পালনে নিজেকে মানিয়ে নিতে না পারায় অসহ্য মনোভাবের জায়গা থেকে সে নিজেই ওইদিন সকালে ঘুমন্ত শিশুকে বাড়ির অদূরে বড়াল নদে ফেলে দেন। পরে তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আক্তার বলেন, ঘটনাটিকে নাটকীয় রুপ দেবার চেষ্টা করেছিলেন মা শ্রাবন্তী বিশ্বাস। মেয়ে হত্যা করে বিচার দাবিতে নিজেই হত্যা মামলাও দায়ের করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের কাছে রহস্যটি ধরা পড়ে। ঘটনার পর মাত্র চার ঘন্টায় পুলিশ রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়।
এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা শ্রাবন্তী বিশ্বাসকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
ভিওডি বাংলা/ডিআর
বাগেরহাটে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১ জন নিহত
বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির …

কুয়াকাটায় পর্যটকদের ফুল দিয়ে ঈদ শুভেচ্ছা জানাল বিএনপি
পটুয়াখালী প্রতিনিধি
কুয়াকাটায় পবিত্র ঈদুল আজহার লম্বা ছুটিতে সাগরকন্যা কুয়াকাটায় …

বগুড়ায় ঈদের দিনে পুকুরে ডুবে প্রাণ গেল শিশুর
বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে পুকুরে গোসল করতে নেমে আদুরী আক্তার …
