টানা বৃষ্টিতে যশোরে ৩ হাজার ১৯১ হেক্টর জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি


যশোর প্রতিনিধি
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় ধান, ধানের বীজতলা, ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সদর উপজেলার বারীনগর, চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর, কাশিমপুর ইউনিয়ন ও চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা, পাশাপোল, সিংহঝুলিসহ এর পার্শ্ববর্তী এলাকা। মূলত ধান-সবজি খেতে পানি জমে যাওয়ায় ক্ষতির শিকার হচ্ছেন কৃষকরা।
এসব সবজির মধ্যে রয়েছে পুইশাক, বরবটি, পটল, উচ্ছে, ধেড়স, বেগুন, কচুরমুখি। অনেকে আগাম পাতাকপিরও চাষ করেছেন। চুড়ামনকাটির আব্দুলপুরে দেশের বৃহত্তম সবজি বিজ উৎপাদন জোনে এবারও আগাম পাতাকপিসহ অন্যান্য সবজির চারা রোপণ করেছিলেন কৃষক। অনেক জমি চারা উৎপাদনের জন্যও প্রস্তুত করা হচ্ছিল। কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে এসব কিছুই পানির নিচে চলে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবার বর্ষায় আক্রান্ত ফসলি খেতের পরিমাণ ৩ হাজার ১৯১ হেক্টর।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, জেলায় চলতি মৌসুমে ৬০ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে ধান, সবজিসহ নানা ফসলের আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে রোপা আউশ ১৫ হাজার ৫১০ হেক্টর, রোপা আমন ৬৬৫ হেক্টর, রোপা আমনের বীজতলা ৬ হাজার ৯৪৫ হেক্টর, পাট ২৪ হাজার ৩৪০ হেক্টর, মরিচ ৪৬০ হেক্টর এবং শাকসবজি ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি রয়েছে। কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে ১,২৪৫ হেক্টর জমির রোপা আউশ, ৫০ হেক্টর জমির রোপা আমন, ৫৯০ হেক্টর জমির রোপা আমনের বীজতলা, ৬২৫ হেক্টর জমির পাট, ১২০ হেক্টর জমির মরিচ এবং ৫৬১ হেক্টর জমির শাকসবজি।
যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস সর্বশেষ তিনদিনের বৃষ্টিপাতের যে তথ্য দিয়েছে তাতে সবচেয়ে বেশি ১৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে সোমবার। ১৩ জুলাই ৬৭ মিলিমিটার এবং ১৫ জুলাই বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ১৯ মিলিমিটার এবং বুধবার বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয় ২২ মিলিমটার।
এসব এলাকার কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে অধিকাংশ সবজি ও সবজি চারার ক্ষেত তলিয়ে গেছে। পানির নিচে চলে গেছে রোপা আমন, রোপা আউশ ও রোপা আমনের বিজতলাও। ফলে কৃষকরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে রয়েছেন। বিশেষ করে সবজি পাওয়ার আশা একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছেন তারা।
তাদের আশংকা রোদ ওঠার সাথে সাথেই সকল সবজি মাঠেই মারা যাবে। যাও কিছু অবশিষ্ট থাকবে তারও ফলন ভালো হবে না। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে।
যশোর জেলার অন্যতম বৃহত্তম এড়লের বিল দেখে বোঝার উপায় নেই এটা আদতে বিল না সাগর। সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ও দেয়াড়া ইউনিয়ন এবং চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা, পাশাপোল ও সিংহঝুলি ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এড়োলের বিলে এবারও হাজার হাজার বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছিলেন কৃষক। তার সবই বর্ষার পানিতে তলিয়ে গেছে।
চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ও ফুলসারা ইউনিয়নের মধ্যবর্তী বলিদাপাড়া বিল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। গত বছরও এই বিল থেকে ইরি ও আমন ধান ঘরে ওঠাতে পারেননি কৃষক। এরমধ্যে পানিতে তলিয়ে ছিল আমন ধান এবং শিলা বৃষ্টিতে বিনষ্ট হয়েছিল ইরি। এবারের বৃষ্টিতে আউশ, আমন পানির নিচে চলে যাওয়ায় একই ধরনের শংকার মধ্যে রয়েছেন কৃষক।
সিংহঝুলি ইউনিয়নের তৌফিকুজ্জামানসহ বেশ কয়েকজন কৃষক বাংলানিউজকে বলেছেন, অবস্থা খুব খারাপ। নিচু জমির ধান সব পানির নিচে চলে গেছে। অধিকাংশ বিজতলা তলিয়ে গেছে। উপজেলার স্বরূপদাহ ইউনিয়নের বাওড়ের ধার দিয়ে যেসব বিজতলা ছিল তার সবই পানির নিচে চলে গেছে।
এসব কৃষক বলেন, এখন ধান রোপণের সময়। এরকম বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে তা হয়তো আর সম্ভব হবে না। তবে, সকল শংকার মধ্যেই ক্ষতির শিকার কৃষক নতুন করে বিজতলা তৈরির জন্য ধানবিজ সংগ্রহের চেষ্টা করছেন বলে জানান তারা।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামারবাড়ি) উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা পরিস্থিতির খোঁজখবর নিচ্ছি। আক্রান্ত বিভিন্ন এলাকা কৃষি কর্মকর্তারা পরিদর্শন করছেন। দপ্তরের কর্মকর্তারা পরিস্থিতির খোঁজখবর নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে তারা যশোর সদর উপজেলার আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতির বিষয়টি কৃষক যাতে সামলে উঠতে পারে সে ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সম্ভাব্য সব সহায়তা এবং পরামর্শ প্রদানেরও আশ্বাস দেন তিনি।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
কুমারখালীতে জমি দখলে নিতে বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ
কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়া কুমারখালীতে বিরোধপূর্ণ জমি দখলে নিতে বাড়িঘরে …

মাদারীপুরে যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল
মাদারীপুর প্রতিনিধি
সারাদেশে প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে মাদারীপুরে …

শ্রীপুরে উপজেলা বিএনপির লিফলেট বিতরণ
শ্রীপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি
মাগুরার শ্রীপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান …
