• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

মাদারীপুরে পুরোটাই সিন্ডিকেটের দখলে অ্যাম্বুলেন্স সেবা

মাদারীপুর প্রতিনিধি    ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৯ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

সচল নেই একটিও সরকারি অ্যাম্বুলেন্স, নেই চালকও। ফলে পুরোটাই সিন্ডিকেটের দখলে অ্যাম্বুলেন্স সেবা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স এনে জেলার সবচেয়ে বড় হাসপাতালে ওয়ার্ড বয়কে দিয়ে নামে মাত্র চালু রাখা হয় সেবা। কৌশলে রোগীদের ঠেলে পাঠানো হয় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের দিকে। এতে ইচ্ছে মতো ভাড়া নিচ্ছে মালিক-চালকরা। বিষয়টি বছরের পর পর চললেও যেন দেখার কেউই নেই। যদিও সমস্যা গতানুগতিক সমাধানের আশ্বাস স্বাস্থ্য বিভাগের।

কথা হয় মাদারীপুরের পখিরা গ্রামের মৃত জসিম তালুকদারের স্ত্রী রিজিয়া বেগমের সাথে। স্বামী হারা  রিজিয়া তার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন ধারদেনা করে। সেই ঘরে জন্ম নেয় ফুটফুটে এক ছেলে। শিশুটি অসুস্থ হওয়ায় ভর্তি করা হয় মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে। চিকিৎসক ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। হাসপাতালের বারান্দা ও চারপাশে তিনদিন ঘুরেও পাননি ভাড়ার সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সেবা। পরে সুদে টাকা এনে ৩৫০০ টাকায় ঠিক করেন বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স। মাদারীপুরের পখিরা গ্রামের অসহায় রিজিয়ার মতো সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিয়ে এমন অভিযোগের শেষ নেই রোগী ও স্বজনদের।

সারি সারি হাসপাতালের ভেতর দখল করে আছে দুই ডজনেরও বেশি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স। অথচ, সরকারি এই হাসপাতালে ৬টি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সবই অচল। রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একটি পুরোনো অ্যাম্বুলেন্স এনে ওয়ার্ডবয়কে দিয়ে কোনো মতে চলছে সেবা। ফরিদপুর ও বরিশাল মেডিকেলে যাতায়াতের জন্য ১ হাজার ৫৫০ টাকা ও রাজধানী ঢাকায় ৪ হাজার ৬০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া স্বাস্থ্য বিভাগ। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা ঝিমিয়ে পড়ায় দ্বিগুণেরও বেশি ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক-মালিকরা। অবশ্য, ঝিমিয়ে পড়া অ্যাম্বুলেন্সের সেবা বাড়াতে অনেকটাই অসহায়ত্বের কথা জানায় সিভিল সার্জন।

সদর উপজেলার হাউসদি গ্রামের ফরহাদ বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স কখনই পাওয়া যায় না। বেসরকারিতে বেশি টাকা দেওয়া লাগে। সিরিয়াল ছাড়া কেউ যেতে পারে না। আমরা রোগী ও স্বজনরা তাদের কাছে জিম্মি। এর থেকে আমরা মুক্তি চাই।

আলী হোসেন নামে এক দিনমজুর বলেন, আমার ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করি। সরকারি সেবা না পেয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ফরিদপুর যাচ্ছি। এতগুলো টাকা সংগ্রহ করা আমার পক্ষ অসম্ভব ছিল। পরে ধারদেনা হয়ে সাড়ে তিন হাজার টাকায় ফরিদপুর যাচ্ছি।

রফিকুল ইসলাম নামে রোগীর এক স্বজন বলেন, আমার রোগীকে ঢাকায় নিতে ৮ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে। বাইরে থেকে কোনো অ্যাম্বুলেন্সে আমি যেতে পারিনি। সদর হাসপাতালের ভেতরে রাখা অ্যাম্বুলেন্সেই যেতে হবে। এ যেন অনিয়ন্ত্রিত নিয়ম। আমরা রোগী ও স্বজনরা জিম্মি হয়ে পড়েছি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোনটির চাকা হাওয়া বের হয়ে মাটির সাথে মিশে গেছে, কোনটির আবার যন্ত্রাংশও চুরি হয়েছে। দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় অকেজো হয়ে হাসপাতালের পেছনে পড়ে আছে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সগুলো। এতে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না জেলাবাসী। এদিকে রোগীবহনকারী অ্যাম্বুলেন্সগুলোতে পদ্মা সেতু পারাপারে টোল ফ্রি করেছে কর্তৃপক্ষ।


ভিওডি বাংলা/এস এম রাসেল/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মসজিদের বারান্দা নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষ নিহত ১
মসজিদের বারান্দা নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষ নিহত ১
জোয়ারে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে
জোয়ারে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে
শেরপুরে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ অনুষ্ঠিত
শেরপুরে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ অনুষ্ঠিত