অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ, পরিবহন নেতাদের ‘না’


নিজস্ব প্রতিবেদক
পুরোনো লক্কড়ঝক্কড় বাস ও ট্রাক সড়ক থেকে উচ্ছেদে আবারও বাধা হয়ে দাঁড়ালেন সড়ক পরিবহন খাতের মালিক-শ্রমিকনেতারা। পাশাপাশি তাঁরা সড়ক পরিবহন আইনের সাজা শিথিল করার জন্যও চাপ দিচ্ছেন। দাবি না মানলে ধর্মঘটের মাধ্যমে পরিবহন খাত অচল করে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও একই পথে হাঁটছেন পরিবহন নেতারা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পরিবহন খাতের যাঁরা নেতৃত্বে ছিলেন, তাঁরা কারাগারে কিংবা আত্মগোপনে। এখন নেতৃত্বে আছেন বিএনপিপন্থী পরিবহন নেতারা।
২০ জুলাই সরকার ২০ বছরের পুরোনো বাস-মিনিবাস ও ২৫ বছরের পুরোনো ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে পুরোনো লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন জব্দ করার উদ্যোগ নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ, পরিবহন নেতাদের ‘না’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সরকারের আমলে ‘যানজট ও বায়ুদূষণ’ নিরসনে পুরোনো যানবাহন উঠিয়ে দেওয়াসহ পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনতে দুই দফা বৈঠক হয়। প্রথম বৈঠক হয় গত বছরের ২৪ অক্টোবর। পরেরটি হয় ১৯ ডিসেম্বর।
২৪ অক্টোবরের বৈঠকে পুরোনো যানবাহনের বিষয়ে দুটি বড় সিদ্ধান্ত হয়। প্রথমটি হলো পরবর্তী ছয় মাস পর অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পেরিয়ে যাওয়া যানবাহনের নিবন্ধন বাতিল করে সড়ক থেকে প্রত্যাহার এবং সেগুলো ডাম্পিং স্টেশনে পাঠিয়ে ধ্বংস করে দিতে হবে। দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হলো অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পেরিয়ে যাওয়া যানবাহনের মালিকেরা যাতে নতুন যানবাহন কিনতে পারেন, সে জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, উদ্যোগটি সড়ক পরিবহন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের। এতে স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য দপ্তরের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
সরকারের সিদ্ধান্তের পর ২০ বছরের পুরোনো বাস ও ২৫ বছরের পুরোনো ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ঢাকা মহানগর থেকে অপসারণের বিষয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে বিআরটিএ। গত ১৬ জানুয়ারি যানবাহন মালিক সমিতিগুলোকে বিআরটিএর পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, পুরোনো যানবাহনের স্থলে নতুন যানবাহন নামাতে ব্যাংকঋণ পেতে সহায়তার প্রয়োজন হলে সরকারের সঙ্গে যাতে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু পরিবহনমালিকেরা সরকারের এ উদ্যোগে খুব একটা সাড়া দেননি।
পরিবহনমালিকেরা বলছেন, সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে আগে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
আওয়ামী লীগের আমলে শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান। আর মালিক সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের সহযোগী জাতীয় পার্টির নেতা মশিউর রহমান রাঙ্গা এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ২০২৩ সালের মে মাসে এক প্রজ্ঞাপনে বাসের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ২০ বছর এবং ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের ২৫ বছর নির্ধারণ করে। এসব যান উচ্ছেদ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। উল্টো একই বছরের আগস্টে প্রজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের চাপে তৎকালীন সরকার পিছু হটে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ৬ জুন পুরোনো যানবাহনের বয়সসীমার আগের প্রজ্ঞাপনটি বহাল করে। পাশাপাশি এসব যান সড়ক থেকে উঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ২০ জুলাই অভিযান শুরু করে করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, দেশে পুরোনো লক্কড়ঝক্কড় যানবাহনের সংখ্যা ৮০ হাজার ৩০৯।
ভিওডি বাংলা/ এমপি
দুর্ঘটনা তদন্তে আসছে চীনা প্রতিনিধি দল: বিমান বাহিনী
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা তদন্তে চীনা …

বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই : প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের …
