কোটি টাকার শিশু পার্ক এখন জঙ্গলে ঢাকা


গাজীপুরের কালীগঞ্জে শিশুদের বিনোদনের জন্য প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একমাত্র শিশু পার্কটি অবহেলায় আজ জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ২০২৩ সালে নির্মিত এই পার্ক উদ্বোধনের পর চালু হয়নি, ফলে সম্ভাবনাময় পার্কটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা শহরে দীর্ঘদিন শিশুদের বিনোদনের সুযোগ ছিল না। সেই শূন্যতা পূরণের জন্য উপজেলা প্রশাসন ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে দরিসোম গ্রামে সরকারি খাদ্যগুদাম সংলগ্ন খাস জমিতে পার্কটি নির্মাণ করে।
তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজিজুর রহমানের পরিকল্পনায় গড়ে ওঠা পার্কটি ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ও জেলা পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম উদ্বোধন করেন। তবে ইউএনও বদলির পর পার্কটির তদারকি বন্ধ হয়ে যায় এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পার্ক পরিচালনার উদ্যোগ থেমে যায়।
পার্কে ছিল স্লিপার, দোলনা, বিভিন্ন রাইড, বেঞ্চ, টিকিট কাউন্টার, ‘গ্রীন-গ্রেস’ শপ হাউজ, ঘোড়া ও মুরগির ভাস্কর্য। তবে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এসব সরঞ্জাম এখন অকেজো, খেলনা মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী পার্ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৭ লাখ ৬০ হাজার ৪১১ টাকা, যা তিন দফায় খরচ করা হয়। প্রথম দফায় ৩৮ লাখ ৩৬ হাজার ৪২৭ টাকা, দ্বিতীয় দফায় ২৯ লাখ ২৪ হাজার ৪৮৪ টাকা, এবং তৃতীয় দফায় ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসনের অফিসের নিকটে থাকা পার্কের এই বেহাল দশা সবার চোখে পড়লেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একাধিক ব্যক্তি জানান, “প্রশাসন কি এটি দেখছে না, নাকি না দেখার ভান করছে? আমরা চাই পার্কটি দ্রুত পরিষ্কার করে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করা হোক।”
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল জানান, পার্কের ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য ছাড়া অন্য কোনো তথ্য দিতে পারব না। তথ্য চাইলে তথ্য অধিকার ফর্মে আবেদন করতে হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তনিমা আফ্রাদ বলেন, “শিশুপার্কটি বর্তমানে প্রায় বন-জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব পার্কটি পরিষ্কার করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদার নিয়োগের চেষ্টা করছি, আশা করছি শিগগিরই পার্কটি সুষ্ঠুভাবে চালু করা সম্ভব হবে।”
ভিওডি বাংলা/জা