সমাজকর্মীর ফেসবুক পোস্টে বদলে গেল শাহীদার জীবন


সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের কালিয়া কান্দাপাড়া গ্রামের শাহীদা খাতুন দীর্ঘ ছয় বছর ধরে পলিথিনে মোড়ানো ঘরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছিলেন। স্বামী ও ছেলেকে হারিয়ে বাকপ্রতিবন্ধী মেয়ে ও ছোট নাতিকে নিয়ে চলছিল তার কষ্টের সংসার। ঝড়ে ঘর ভেঙে যাওয়ার পর প্লাস্টিকের ছাউনি দিয়ে টিকে ছিলেন কোনো রকমে। অবশেষে এক ফেসবুক পোস্টেই বদলে গেল তার জীবন।
গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাস সরেজমিনে গিয়ে শাহীদার দুরবস্থা ফেসবুকে শেয়ার করেন। এরপর দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ অনুদান পাঠান। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে তার হাতে পৌঁছায় ৯৯ হাজার টাকা। সেই অর্থে মামুন বিশ্বাস নির্মাণ করে দেন নতুন একটি ঘর ও টয়লেট। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নতুন ঘরে তুলে দেওয়ার সময় শাহীদার হাতে দেওয়া হয় দুই বস্তা চাল, ডাল, মুরগি, তোষক, চাদর, বালিশ ও জামাকাপড়সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী।
নতুন ঘরে উঠে আবেগাপ্লুত শাহীদা খাতুন বলেন, “আমি অনেক খুশি। ছয় বছর পলিথিনের ঘরে বৃষ্টির পানি সামলিয়ে কষ্ট করেছি। এখন মামুন বিশ্বাস আমাকে ঘর দিয়েছে, সবকিছু দিয়েছে। অনেকদিন পর শান্তিতে ঘুমাতে পারব।”
প্রতিবেশী মোছা. জনেকা খাতুন জানান, শাহীদার কষ্ট ছিল অসহনীয়। তিনি প্রায়ই কান্না করে প্রতিবেশীদের কাছে যেতেন, কিন্তু খুব বেশি সহযোগিতা পাননি। এখন নতুন ঘর ও প্রয়োজনীয় সবকিছু পেয়ে তিনি খুশি, আর তাতেই খুশি হয়েছেন আশপাশের মানুষও।
সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাস বলেন, “গণমাধ্যমে খবর দেখে আমি শাহীদা খালার বাড়িতে যাই। এরপর ফেসবুকে পোস্ট দিলে ৯৯ হাজার টাকা অনুদান আসে। সেই টাকা দিয়ে নতুন ঘর ও প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গত ছয় বছর ধরে শাহীদা খাতুন ঝড়-বৃষ্টি মোকাবিলা করে পলিথিনের ছাউনি দেওয়া ভাঙা ঘরে বসবাস করছিলেন। সরকারি কোনো সহায়তা বা ভাতা না পেয়ে কখনো দিনমজুরি, আবার কখনো মানুষের দানে চলতো তার সংসার। অবশেষে নতুন ঘর পেয়ে বাকপ্রতিবন্ধী মেয়ে তারাবানু ও নাতি আরমানকে নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকার সুযোগ পেলেন তিনি।
ভিওডি বাংলা/জা