জাতিসংঘের সামনে বিএনপির শোডাউন


জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সামনে অধিবেশন চলাকালীন বিএনপি ব্যাপক সমাবেশ আয়োজন করে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য থেকে নেতাকর্মীরা ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত হন।
জাতিসংঘে ড. ইউনূসের আগমনের প্রতিবাদ জানাতে একই জায়গায় একই সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়ো হলেও বিএনপির শোডাউনের সামনে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারেনি। একজন নেতাকে বেদম মারধরের পর আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পুলিশ উল্টো আক্রান্ত নেতাকে তুলে নিয়ে যায়।
এ ঘটনার পর আওয়ামী লীগ ওই এলাকা ত্যাগ করে নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়। এরআগে আওয়ামী লীগ জেকসন হাইটস, জেএফকে বিমানবন্দর ও মেনহাটনের গ্র্যান্ড হায়াৎ হোটেলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।
আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন নিজুম মজুমদার। অদূরে দাঁড়িয়ে থেকে মারামারির সংবাদ শুনে তিনি আর সমাবেশে যোগ দেননি।
নেতানিয়াহু অধিবেশন স্থল থেকে চলে যাওয়ার আধা ঘণ্টা পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উভয় দলই নিউইয়র্ক পুলিশ ও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বেলা ১১ টা হতে ১ টা পর্যন্ত সমাবেশ করার অনুমতি পায়। পুলিশ উভয় দলকে জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে কয়েকশ মিটার দূরের ৪৭ অ্যাভিনিউতে সমবেত হওয়ার অনুমতি দেয়।
বিএনপি নেতারা জানান, গত তিনদিন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শিকার হয়ে শুক্রবারের সমাবেশকে তারা টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন। ঢাকা থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও লন্ডন থেকে আনোয়ার হোসেন খোকন নিউইয়র্কে এসে সবকিছু তদারকি করেন। শুক্রবার ১১ টা বাজার আগেই ৪৭ অ্যাভিনিউতে কয়েক হাজার নেতাকর্মী জড়ো করে বিএনপি।
আওয়ামী লীগের সমাবেশ সম্পর্কে বিএনপির এক নেতা বলেন, আপনারা সবাই অবগত আছেন গত তিন/চার দিন ধরে নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগ নজিরবিহীন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। তারা আমাদের নেতাদের ওপর বর্বর হামলা করেছে। হোটেলে এসেও আমাদের নেতাদের হত্যার হুমকি দিয়েছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। তাদের নেত্রী ভারতের আশ্রয়ে থেকে ফোনে তার নেতাকর্মী নির্দেশ দিয়েছেন আমাদের নেতাদের নাজেহাল করার জন্য।
এর সব রেকর্ড, নথি, ভিডিও ফুটেজ আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে জমা দিয়েছি। এছাড়াও এনসিপি নেতা আখতার হোসেন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের অভিযুক্ত করে মামলা করেছেন। এখন ওরা গা ঢাকা দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করছে বলেও জানান বিএনপির এ নেতা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিজুম মজুমদার নামে আওয়ামী লীগের এক নেতা দলীয় কর্মীদের নিয়ে জাতিসংঘের সদরদপ্তরের সামনে আসেন। তারা সমাবেশে যোগ দেওয়ার আগেই উভয়পক্ষ হাতাহাতি ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে নিজুম মজুমদার এলাকা ছেড়ে হোটেলে চলে যান।
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরে তারা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শিকার। নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের নেতারা হোটেল ও বিমানবন্দরে বিএনপির নেতাদের ওপর হামলার চেষ্টা করেছিলেন। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রমাণ মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা সমাবেশে বক্তব্যে বলেন, আ.লীগ দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনে দেশকে অব্যবস্থাপনা ও সন্ত্রাসে নিমজ্জিত করেছে। তারা এখনও নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতায় ফিরে আসার চেষ্টা করছে।
ভিওডি বাংলা/জা