অতিরিক্ত রাগ: লক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায়


রাগ মানুষের স্বাভাবিক আবেগের একটি অংশ। যখন আমরা হুমকি, অন্যায় বা চাপের মুখোমুখি হই, মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা সক্রিয় হয়ে শরীরে অ্যাড্রেনালিন ও কর্টিসল হরমোন নিঃসৃত করে। এতে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, এবং ‘লড়াই বা পালানো’ প্রক্রিয়ার জন্য শরীর প্রস্তুত হয়। তবে হঠাৎ বা বারবার অযৌক্তিক রাগ ভেতরে লুকানো শারীরিক বা মানসিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
অতিরিক্ত রাগের সম্ভাব্য কারণ:
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: অফিস, পরিবার বা অর্থনৈতিক চাপ সহজেই রাগ বাড়াতে পারে।
বিষণ্নতা (ডিপ্রেশন): শুধু দুঃখ নয়, ডিপ্রেশনে সহনশীলতা কমে যাওয়ায় রাগ বেশি দেখা দেয়।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: থাইরয়েড সমস্যা, বয়সজনিত পরিবর্তন বা হরমোনের ওঠানামা আবেগ ও রাগ বাড়াতে পারে।
ঘুমের অভাব ও আসক্তি: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে যায়। অ্যালকোহল বা অন্যান্য নেশাজাতীয় পদার্থও রাগের প্রবণতা বাড়ায়।
ব্যক্তিত্ব বা মানসিক রোগ: ইমপালস কন্ট্রোল ডিজঅর্ডার, বাইপোলার ডিজঅর্ডার ইত্যাদিতে রাগের মাত্রা সাধারণের চেয়ে বেশি থাকে।
রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়:
গভীর শ্বাস নিন: হঠাৎ রাগ উঠলে কয়েক সেকেন্ড বিরতি নিন।
সময় নিন: সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে শান্ত হয়ে উত্তর দিন।
শারীরিক কার্যক্রম: হাঁটা বা ব্যায়াম করলে চাপ কমে।
সমাধান খুঁজুন: অভিযোগ নয়, সমস্যা সমাধানে মনোনিবেশ করুন।
ভালো ঘুম ও স্বাস্থ্যকর খাবার: মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: রাগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা কাউন্সেলরের সহায়তা নিন।
রাগ স্বাভাবিক আবেগ হলেও অতিরিক্ত রাগ ভেতরের সমস্যার সংকেত। তাই উৎস খুঁজে বের করে নিয়ন্ত্রণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
তথ্যসূত্র: আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, মায়ো ক্লিনিক, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ
ভিওডি বাংলা/জা