পেঁয়াজের দাম না কমলে আমদানির সিদ্ধান্ত: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, দেশের পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও কিছু দিন ধরে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ২৮০০টি আমদানির আবেদন এসেছে এবং চার-পাঁচ দিনের মধ্যে বাজার স্বাভাবিক না হলে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রোববার (৯ অক্টোবর) বিকেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেঁয়াজের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এ কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, দেশে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কোনো সংকট নেই, যথেষ্ট মজুত রয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। ফলে আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে বাজার স্বাভাবিক না হলে আমরা আমদানির অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেব।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ইতোমধ্যে পেঁয়াজ আমদানির জন্য ২ হাজার ৮০০ আবেদন পড়েছে। আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে মূল্য সহনীয় পর্যায়ে না এলে আমদানি অনুমোদন ইস্যু করা হবে।
হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া অযৌক্তিক মন্তব্য করে তিনি বলেন, একাধিক কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। মৌসুম শেষ, হঠাৎ ভারী বৃষ্টি, পেঁয়াজ সংরক্ষণের সময় শুকিয়ে যাওয়ায় ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ।
‘হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, আমরা বাজারে নজর রাখছি। দেশে যথেষ্ট পেঁয়াজের মজুত রয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। ফলে আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক না হলে আমরা আমদানির অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি মজুতদার বা সিন্ডিকেটের কারণে হয়েছে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমার কাছে মজুতদারি বা সিন্ডিকেটের খবর নেই। সাময়িক সংকট তৈরি হয়েছে। আশা করি দ্রুত সংকট কেটে যাবে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য পেঁয়াজ মজুত করা হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে।
‘পেঁয়াজ আমদানির জন্য দুই হাজার ৮০০ আমদানির আবেদন পড়েছে। এর ১০ শতাংশ যদি অনুমোদন দেওয়া হয় তাহলে বাজার পেঁয়াজে সয়লাব হয়ে যাবে। কৃষক ক্ষতির মুখে পড়বেন। এজন্য আমরা সামগ্রিক বিবেচনায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’
সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে, এখানে ব্যর্থতা কোথায়? সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা কি নেই? –এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, সিন্ডিকেশন হচ্ছে সেটা আপনারা দেখিয়ে দেন। অনিয়ন্ত্রিত মজুতদারি হচ্ছে, সেখানে আমাদের ক্ষমতা আছে, সেটা দিয়ে সমাধান করা হবে।
মজুতদারির কোনো তথ্য আপনার কাছে আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে এই মুহূর্তে কোনো সিন্ডিকেট বা মজুতদারির তথ্য নেই।
আমদানি শুল্ক তুলে দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমার মনে হয় না আমদানি শুল্ক তুলে দেওয়ার প্রয়োজন আছে। শুধু আমরা আইপি দিলে বাজার ঠিক হয়ে যাবে। আমদানির অনুমোদন দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ উঠে যাবে। আমদানির অনুমোদন দিলে সামগ্রিক অর্থনীতি, কৃষি অর্থনীতি, কৃষক এবং ভোক্তা সবার কথা বিবেচনায় নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এটি কোনো সাইকেল নয় যে আমরা যেকোনো একটা গলিতে ঢুকিয়ে দিলাম।
কয়েক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেড়ে যাওয়াকে যৌক্তিক মনে করেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই যুক্তিসংগত নয়। এমন কোনো বিশেষ ঘটনা ঘটেনি। এই মুহূর্তে কৃষকের কাছে পেঁয়াজ নেই এবং এ বাড়তি মূল্যের টাকা কৃষকের পকেটে যায়নি।
দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন মৌসুম শেষ, হঠাৎ ভারী বৃষ্টি, সংরক্ষণের সময় ওজন কমে যাওয়া। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, মজুতদারি বা সিন্ডিকেটের কোনো তথ্য নেই।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, বর্তমানে দেশে প্রায় ৩.৫ লাখ টন পেঁয়াজ মজুত আছে এবং এ মাসে ৮৫-৮৭ হাজার টন, আগামী মাসে আড়াই লাখ টন নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। তাই বর্তমানে কোনো সংকট নেই।
ভিওডি বাংলা/জা







