নতুন বছরে কীভাবে তৈরি করবেন সচ্ছল অর্থনৈতিক জীবন

নতুন বছরের শুরুতেই ব্যক্তিগত জীবনে আর্থিক সফলতা ও সচ্ছলতা নিশ্চিত করতে কেবল আয় বাড়ানোই যথেষ্ট নয়, বরং প্রয়োজন সুশৃঙ্খল পরিকল্পনা ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশল। বছরের শুরুতেই যদি সঠিক আর্থিক রূপরেখা তৈরি করা যায়, তবে সারা বছরের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব হতে পারে।
বিশেষ করে ২০২৬ সালে মূল্যস্ফীতি এবং সুদের হারের ওঠানামা মোকাবিলায় বিনিয়োগ ও ব্যয় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক আঞ্চলিক প্রধান ও ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ফকির আকতারুল আলম মনে করেন, আর্থিক সচ্ছলতার জন্য শুরুতেই একটি নিখুঁত আয়-ব্যয়ের খাতা তৈরি করা প্রয়োজন। এতে প্রতি মাসের খরচ ট্র্যাক করা সহজ হবে এবং অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা বা সাবস্ক্রিপশন ফি-র মতো খাতে টাকা ‘লিক’ হওয়া শনাক্ত করা সম্ভব হবে।
বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জরুরি তহবিল বা ইমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। অন্তত তিন থেকে ছয় মাসের জীবনযাত্রার খরচের সমপরিমাণ অর্থ লিকুইড বা নগদে রাখা উচিত, যাতে চাকরি হারানো বা হঠাৎ কোনো বড় বিপদে হাত পাততে না হয়।
ঋণের বোঝা কমানোও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ক্রেডিট কার্ড বা ব্যক্তিগত ঋণের উচ্চ সুদ অনেক সময় সঞ্চয়কে গ্রাস করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ব্যক্তিগত ঋণের হার ঊর্ধ্বমুখী, তাই যত দ্রুত সম্ভব এসব ঋণ শোধ করা বুদ্ধিমানের কাজ।
দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য যেমন-বাড়ি কেনা, সন্তানের শিক্ষা বা অবসরের জন্য আলাদা তহবিল গঠন এবং স্থায়ী আমানত বা সঞ্চয়পত্রে নিয়মিত বিনিয়োগ করা উচিত। এনবিআর অনুমোদিত খাতে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াতের পাশাপাশি দ্বিগুণ মুনাফা পাওয়ার সুযোগও রয়েছে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে মাসিক বাজেটে অন্তত ৮ থেকে ১০ শতাংশ বাড়তি বরাদ্দ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা, যাতে ক্রয়ক্ষমতা কমে গেলেও জীবনযাত্রার মান ব্যাহত না হয়।
হঠাৎ আসা চিকিৎসার বিশাল খরচ সামলাতে স্বাস্থ্য ও জীবনবীমা করানো অত্যন্ত জরুরি। আধুনিক ডিজিটাল টুলস যেমন-ব্যাংক অ্যাপ, বিকাশ, নগদ বা ইউনেটের মাধ্যমে নিয়মিত বিল পরিশোধ ও খরচ পর্যবেক্ষণ করলে সময় বাঁচে এবং ভুলের আশঙ্কা কমে।
সবশেষে, প্রতি মাসে অন্তত একদিন নিজের আর্থিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা রিভিউ করার মানসিকতা থাকা জরুরি। বাজারের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিকল্পনা সংস্কার করলেই আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে স্বচ্ছল জীবন চালানো সম্ভব বলে মনে করেন ফকির আকতারুল আলম।
ভিওডি বাংলা/জা







