জন্মসনদ নিয়ে অন্তহীন ভোগান্তি
দোকানে মিলছে জন্মসনদ!


মোক্তাদির হোসেন প্রান্তিক
রাজধানীতে জন্মসনদ তৈরি ও সংশোধন করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও হচ্ছে না সমাধান। এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি চান নগরবাসী।
জন্মসনদ নিয়ে অন্তহীন ভোগান্তির শেষ কোথায়?
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সন্তানের কিংবা নিজের জন্মসনদ তৈরি ও সংশোধনের জন্য এসেছেন অংসখ্য মানুষ। কিন্তু পাঁচ আগস্টের পর কাউন্সিলর না থাকায় পাল্টেছে নিয়ম। তাই এ নিয়ে আর মাথাব্যথা নেই কাউন্সিলরের দফতরের কর্তাদের। অথচ অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদনের কাজটি তাদেরই করে দেয়ার কথা। যা নিয়ে ক্ষোভ ঝারছেন নগরবাসী।
অভিযোগ রয়েছে, এই কার্যালয়ে কর্মরত এক ব্যক্তির কাছে টাকা দেয়ার পরও মেলেনি জন্মসনদ। পরে সময় সংবাদকে সপ্তাহখানেকের ভোগান্তির কথা জানালেন ওই ভুক্তভোগী।
জন্মসনদের বিষয়ে খোঁজ নিতে এবার যাত্রা নগর ভবনে। সেখানকার রেজিস্ট্রার জানালেন, তিনদিনেই সেখানে মেলে জন্ম সনদ। অথচ, সেবাপ্রত্যাশীরা বলছেন, দুয়ারে দুয়ারে ধরনা দিয়েও মিলছে না তা। দায়িত্বপ্রাপ্ত সবাই টাকা চায়। একেকজন একেক রকম হয়রানি করছে।
এই ভোগান্তির শেষ কোথায়? এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে কয়েক দফা সময় চাইলেও জনসংযোগ কর্মকর্তার মাধ্যমে ব্যস্ততার অজুহাত দেখালেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাহী কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান। দায় চাপালেন আঞ্চলিক কর্মকর্তার ওপর।
ডিএসসিসির আঞ্চলিক-১ এর কর্মকর্তা বলেন, ‘টাকা নিচ্ছে এই ধরনের কোনো অভিযোগ আমার কাছে কেউ করেনি। ওয়ার্ড কার্যালয়ে একজন সচিব ও একজন সহকারী থাকেন কেউ যদি কোনো কথা বলে থাকে সেই দায়িত্ব তার।’
অন্যদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) চিত্রও এক। মিরপুর-১০ এ জোন অফিসে কর্মরত এক ব্যক্তির নামে অভিযোগ রয়েছে, জন্ম নিবন্ধন করতে এলেই দিতে হয় কয়েক হাজার টাকা।
দালাল ছাড়া মেলে না জন্মসনদ। সরকারি ফি ৫০ টাকা হলেও দোকানে গেলে তিন হাজার টাকায় মিলছে সনদ। চক্রের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের কর্মীরাও জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে নাগরিকদের চরম ভোগান্তি হলেও এর দায় নিতে নারাজ সিটি করপোরেশন।
নতুন জন্মসনদ কিংবা ভুল সংশোধন। হাতে পাবেন তিন দিনের মধ্যে। এজন্য গুণতে হবে তিন হাজার টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জন্মসনদ নিয়ে কাজ করা এক দোকানদারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ২৫০০ টাকা ধরে রাখতে হবে নতুন জন্মসনদ তৈরি করতে। টাকা কমানোর অনুরোধ করলেও হবে না।
ওই দোকানদার আরও বলেন, টাকা পয়সা তো লাগবেই। এই যে এটা করতে তারা এক হাজার টাকা করে চার্জ করবে। ৩ হাজার না, ২৫০০ টাকা দেবেন তাকে। সরকারি চাকরি করেন তো ওনারা, ফোনে কথা বলেন না। হাতে হাতে কাজ করে দেন। ফোনে কথা বলেন না। ফোনে অ্যাভিডেন্স থেকে যায় তো, তাই তারা ফোনে কথা বলেন না।
আবেদনের জন্য টিকা কার্ড বা হাসপাতালের ছাড়পত্র না থাকলেও কোনো সমস্যা নেই। এমন কী বাড়ি কিংবা হাসপাতাল, জন্ম যেখানেই হোক পছন্দের ঠিকানারও ব্যবস্থা আছে এসব দোকানে। টাকা দিলেই মিলবে সব কাগজপত্র। ওই দোকানদার বলেন, সব তথ্য ম্যানেজ করে দেয়া যাবে।
সনদ জালিয়াতি করা চক্রটি হাসপাতালের ছাড়পত্রের জন্য ব্যবহার করে বেসরকারি একটি ক্লিনিকের নাম। সত্যতা যাচাইয়ে গেলে অভিযোগের ভিত্তি নেই বলে জানান ওই হাসপাতালের কর্মীরা।
আবারও সেই দোকানদারের কাছে যাওয়া হলে তিনি সব কথা অস্বীকার করেন। ডিএসসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল ১) মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, যদি কোনো সেবা দেয়ার বিষয় থাকে, আমরা সেটা করে দেব। আর মিডিয়াতে বক্তব্য আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বা পিআরও দেন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ
আসন ভাগাভাগি ও সমঝোতায় ব্যস্ত দলগুলো
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস …

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনায় ঈদুল আজহা
ইবি প্রতিনিধি
মুসলিমদের জন্য ঈদুল আজহা পরম আনন্দের একটি দিন। …
