কবি নাসিমা সুলতানা শফির ইন্তেকাল


নিজস্ব প্রতিবেদক
কবি, ছড়াকার ও সমাজসেবী নাসিমা সুলতানা শফি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
গতকাল বাদ ফজর গুলশান আজাদ মসজিদে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিক্রমপুরের ছনবাড়ি এলাকায় তাঁদের প্রতিষ্ঠিত আল-মদিনা জামে মসজিদ ও মাদ্রাসায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে মাদ্রাসা-সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
নাসিমা সুলতানা শফি প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ও রাজনীতিবিদ শফি বিক্রমপুরীর স্ত্রী। তিনি এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে নেত্রকোনা সাংবাদিক ফোরাম-ঢাকা, নেত্রকোনা প্রেসক্লাব ও প্রতিভা প্রকাশ গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
নেত্রকোনার প্রথম মহিলা সাংবাদিক হিসেবে নাসিমা সুলতানা শফির সাংবাদিকতা জীবনের সূচনা ঘটে। স্বাধীনতার পর তিনি ‘বেগম’ পত্রিকায় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। পাশাপাশি তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গনের এক সুপরিচিত নাম। ষাটের দশকে তাঁর ছোটগল্প, ছড়া ও কবিতা ‘উত্তর আকাশ’, ‘বেগম’ এবং স্থানীয় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
সত্তরের দশকে বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার, সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ শফি বিক্রমপুরীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে তাঁর সাহিত্যচর্চায় নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি থেকে প্রকাশিত তাঁর ছড়াগ্রন্থ ‘শিউলি বেলি জুঁই’ পাঠকমহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এছাড়া তাঁর লেখা অন্যান্য জনপ্রিয় ছড়াগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘মজার ছড়া’, ‘খোকা খুকুর ছড়া’, ‘মিষ্টি মধুর ছড়া’, ‘টাপুরটুপুর সারা দুপুর’, ‘দূর আকাশে চাঁদের দেশে’, ‘চাঁদনি রাতে পরির সাথে’, ‘ফুলের বাসে পরি আসে’, ‘দূর্বাঘাসে সূর্য হাসে’, ‘বাতাস দোলে শাপলা ফুলে’, ‘যাচ্ছে গাড়ি চাঁদের বাড়ি’, ‘গাঁয়ের ছায়া মায়ের মায়া’, ‘মেঘের নায়ে অচিন গাঁয়ে’ এবং ‘জোছনা ঝরে খোকার ঘরে’। সর্বমোট ১৩টি ছড়াগ্রন্থ পাঠকের মন জয় করেছে।
তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘তবুও স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে’। নান্দনিক গল্পগ্রন্থ হিসেবে রয়েছে ‘প্লাবিত জোছনা’ ও ‘মনের ভেতর মন’। মিষ্টি প্রেমের উপন্যাস ‘হৃদয়ে ভালোবাসা’, কিশোর উপন্যাস ‘রইশ্যার শান’ এবং শিশুকিশোর গল্পগ্রন্থ ‘রাজুর বন্ধু ব্যাঘ্রমামা’, ‘খুকু ও ভূত’ ও ‘তুতুল-মিতুল ও বিড়ালছানা’ পাঠকের কাছে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে।
নাসিমা সুলতানা শফি নেত্রকোনার ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং দীর্ঘদিন ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি নাসিমা শফি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বেগম ফাতেমা আরশেদ আলী উচ্চবিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। পাশাপাশি বিক্রমপুরে আল-মদিনা জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা এবং নেত্রকোনার পাঁচকাহুনিয়ায় ফাতেমা আমীর আলী দারুল উলুম মাদ্রাসা ও মসজিদ এবং বারহাট্টার দশাল গ্রামে আশরাফুল উলুম হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন।
ভিওডি বাংলা/ এমপি
ফারজানা ইসলামের নতুন বই ‘সময়রেখায় জুলাই অভ্যুত্থান’
নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের প্রতিদিনের ঘটনাপ্রবাহ ও রাজনৈতিক উত্তাপকে সময়ের …

প্রখ্যাত ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান আর নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য ‘জাগ্রত বাংলা’, ‘সংশপ্তক’, ‘বিজয় কেতন’ ও …
