• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

মানবাধিকার রক্ষায় সরকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায়: আসিফ নজরুল

কক্সবাজার প্রতিনিধি    ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৯ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানবাধিকার রক্ষা তো দূরের কথা, বরং মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হতো। আইনেও ছিল নানা সীমাবদ্ধতা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার রক্ষায় একটি মাইলফলক স্থাপন করে দিয়ে যেতে চায়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এত শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতায় আমরা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। 

শনিবার দুপুরে কক্সবাজারের বেওয়াচ হোটেলের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫ নিয়ে পরামর্শক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। ইউএনডিপির সহায়তায় আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় অংশীজনদের নিয়ে এই পরামর্শক সভার আয়োজন করেন। 

সভায় ড. আসিফ নজরুল বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে স্বাধীন করতে চায়। এই কমিশন গুম, খুন সহ যে কোন মানবাধিকার হরনের ঘটনা স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে পারে সে বিষয়ে আইন সংস্কার করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠানে রুপ দিতে চায়। 

উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আরও বলেন, একটি শক্তিশালী মানবাধিকার কমিশন না থাকা বা করতে না পারলে কি হয় সেটা আওয়ামী লীগ আমলের ১৫ বছরে দেখা গেছে। উচ্চ আদালত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পক্ষের শক্তি হিসেবে হাজির হয়েছিল। মানবাধিকার রক্ষা তো দূরের কথা মানবাধিকার হরণের কাজে লিপ্ত ছিল। বিগত সরকারের সময় মানবাধিকারের কর্তা ব্যক্তিরা যারা ছিল তারা দেশে ও দেশের বাইরে মানবাধিকার লঙ্গনের পক্ষে দেশে ও বিদেশে বিভিন্নভাবে বক্তব্য রেখেছেন। বর্তমান সরকার ভালো একটি আইন করে দিয়ে যেতে চায়। আশা করা যায়, ভালো একটি আইন করে দিয়ে যেতে পারবে সরকার। কারণ এই সরকারের জুলাই গনঅভ্যুত্থানের একটি স্মৃতি রয়েছে। 

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প ও গনপুর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছরের গুম, খুন ও আয়না ঘর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিগত সময়ে মানবাধিকার কর্মীদেরকেই গুম করা হতো। তাদের উপর টর্চার ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হতো। 

তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার কমিশনকে এমনভাবে সংস্কার করবে যাতে কমিশন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা গুম খুনের ঘটনা স্বাধীনভাবে তদন্ত করার ক্ষমতা থাকে। 

সভায় তিনি আরো বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে যে দুঃশাসন, আয়না ঘর, নির্যাতন, গুম হয়ে যাওয়া বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমিক অসংখ্য মানুষের সাথে যা হয়েছে তা যেন আর না হয়। সেজন্য অন্যরকম একটি প্রতিষ্ঠানে যেন মানবাধিকার কমিশনকে রূপান্তরিত করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করছে বর্তমান সরকার।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের বিশেষ পরামর্শক ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন। বক্তব্য রাখেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি মি স্টিফেন লিলার, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মি রেটু সিগফ্রিড রেংগলি, গুম কমিশনের প্রধান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ। 

সভায় বলা হয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৩ নং আইন) রহিত করে নতুনভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়নের ড্রাফট নিয়ে কাজ করছে সরকার। 

প্রস্তাবিত এই অধ্যাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হিসেবে কমিশনকে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও চাকরিজীবীদের বিরুদ্ধেও স্বাধীনভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এছাড়া গুম ও খুন প্রতিরোধে আলাদা আইন প্রণয়নের বিষয়টিও ড্রাফটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে গুরুত্বপূর্ণ একটি পরিবর্তন হলো—এবার থেকে কমিশন সরকারী প্রতিষ্ঠান ও চাকরিজীবীদের বিরুদ্ধেও স্বাধীনভাবে পদক্ষেপ নিতে পারবে, যা পূর্ববর্তী আইনে ছিল না।

এছাড়া গুম ও খুন প্রতিরোধে আলাদা আইন প্রণয়নের বিষয়টিও ড্রাফটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এজন্য আলাদা ক্ষমতাও দেয়া হবে কমিশনকে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলে অধ্যাদেশ প্রণীত হলে, এই সরকারের আমলেই তা বাস্তবায়ন হবে।

ভিওডি বাংলা/ এমপি


  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
এটিইউ প্রধানের দায়িত্ব নিলেন রেজাউল করিম
এটিইউ প্রধানের দায়িত্ব নিলেন রেজাউল করিম
নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে ড. ইউনূসের অভিনন্দন
নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে ড. ইউনূসের অভিনন্দন
পুলিশের সাবেক ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম গ্রেপ্তার
পুলিশের সাবেক ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম গ্রেপ্তার